বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাজেট বরাদ্দে দুর্বল পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন ঘাটতি দীর্ঘদিনের সমস্যা। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য পূরণ না হওয়া নিয়মিত ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ভাগ করার প্রক্রিয়াটি সঠিক হয়নি। আলোচনা ছাড়া, পেশাজীবীদের সুযোগ কমিয়ে ও অংশীজনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে এটি করা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এখন সংশোধন করা জরুরি।
আজ সোমবার লেকশোর হোটেলে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলেন ড. দেবপ্রিয়।
দেবপ্রিয় বলেন, এনবিআর ভাগ করার সিদ্ধান্তটি সঠিক হলেও প্রক্রিয়াটি ভুল ছিল। আলোচনা ব্যতিরেকে এটি করা হয়েছে, যা সংশোধন করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হ্রাস, দুর্বল ঋণপ্রবাহ, মূলধনি যন্ত্রপাতি ও এফডিআই কমেছে এবং পুঁজিবাজারের নিম্নমুখী প্রবণতা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা দেবে। বেকারত্ব বেড়েছে, শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি কমেছে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এমন কথা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব কম এবং পরোক্ষ কর বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়ছে।
ড. দেবপ্রিয়র মতে, বাজেটে সুদ ও ভর্তুকি ব্যয়ের আধিক্য এবং ঘোষিত নীতিমালা ছাড়া অ্যাডহক ভিত্তিতে অর্থনীতি পরিচালনা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা সৃষ্টি করছে। চরম ও যুব দারিদ্র্য বাড়ছে। সংস্কারে সরকারের কিছু উদ্যোগ থাকলেও দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনা ও বৈষম্য মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। পুরোনো কাঠামোতেই কাজ চলছে, যা হতাশাজনক। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক জটিল পরিস্থিতি বাজেট প্রণয়নে প্রভাব ফেলবে।
দেবপ্রিয় আমলাতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা ও ‘চোরতন্ত্রের’ পতনের পর তাঁদের পুনরুত্থানের কথা উল্লেখ করেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আত্মবিশ্বাস রাখার আহ্বান জানান এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক কাঠামোর চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ড. আবু মুহাম্মদ ইউসুফ কর-জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা কম উল্লেখ করে তা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
বিল্ডস সিইও ফেরদৌস আরা বেগম কর্মসংস্থান বাড়াতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং শ্রমিক ও স্টার্টআপদের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেন।