Homeজাতীয়জাগৃকের ৪ বাণিজ্যিক প্লট বরাদ্দে নির্দেশিকা লঙ্ঘন

জাগৃকের ৪ বাণিজ্যিক প্লট বরাদ্দে নির্দেশিকা লঙ্ঘন

[ad_1]

রাজধানীর মিরপুরে প্রশ্নবিদ্ধ কাগজপত্রের ওপর ভিত্তি করে চারটি বাণিজ্যিক প্লট বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক)। মূল্যবান এসব বাণিজ্যিক প্লট বরাদ্দে অবাধ প্রতিযোগিতা এড়াতে সংস্থাটির বরাদ্দ নির্দেশিকার ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। এতে সরকার যেমন বিপুল রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে, তেমনি প্রশ্ন উঠেছে বরাদ্দপ্রক্রিয়া নিয়েও।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালের মূল নথি গায়েব করে এসব প্লটের বিপরীতে তৈরি করা হয়েছিল পুনর্বাসন কাগজপত্র। সেই পুনর্বাসন কাগজপত্রের ভিত্তিতে যাঁরা দখলে ছিলেন, তাঁদেরই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এসব প্লট। শুধু তা-ই নয়, পুনর্বাসন কাগজপত্রে আবাসিক শ্রেণিতে থাকা এসব প্লট শ্রেণি পরিবর্তন করেই বাণিজ্যিক প্লট হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয় তাঁদের। জাগৃকের অনুমোদিত নকশায় প্লটগুলো বাণিজ্যিক হিসেবে চিহ্নিত করা আছে। ঘটনা জানাজানি হলে ২০ মে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে তদন্তের নির্দেশনা দিয়ে জাগৃকের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে জাগৃকের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাঁরা দখলে ছিলেন তাঁদেরই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে প্লটের শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য ফি নেওয়া হয়েছে। সরকার রাজস্ব পেয়েছে। আর যেসব দাপ্তরিক কাজকর্ম হয়েছে, তা সবকিছু যাচাই-বাছাই ও মাঠপর্যায় থেকে প্রতিবেদন নিয়ে করা হয়েছে। এখানে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে মনে হয় না।’

জাগৃকের ২৬৫তম বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাজধানী ঢাকার মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনে মেইন রোডে ব্লক-ক এর ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর পুনর্বাসন প্লটকে বাণিজ্যিক প্লট হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৩ দশমিক ২৫ কাঠা আয়তনের ১ নম্বর প্লটটি ১৯৯৪ সালের ২২ মার্চ নিখিল চন্দ্র দাশ নামের এক ব্যক্তিকে পুনর্বাসন প্লট হিসেবে বরাদ্দ দেখানো হয়। একই আয়তনের ২ নম্বর প্লটটি ওই সময়েই মো. মকবুল হোসেনকে, ৩ দশমিক ২৫ কাঠা আয়তনের ৩ নম্বর প্লটটি লিটন চন্দ্র দাসকে, ৪ নম্বর প্লটটি বশির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে পুনর্বাসন প্লট হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ চারটি প্লটই সংস্থার অনুমোদিত নকশায় বাণিজ্যিক হিসেবে চিহ্নিত আছে।

জাগৃকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ১৯৯৪ সালে ‘পুনর্বাসন প্লট’ হিসেবে বরাদ্দপত্র সংগ্রহ করে উল্লেখিত প্লটগুলো দখলে রেখেছেন দালিলিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। এসব প্লটে তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী কাঠামো তৈরি করে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও পরিচালনা করে আসছেন। বিতর্কিত এসব পুনর্বাসন কাগজের বৈধতা নেওয়ার জন্য তাঁরা বিভিন্ন সময় চেষ্টা করলেও কর্তৃপক্ষ এতে সাড়া দেয়নি। কিন্তু জাগৃকের ২৬৫তম বোর্ড সভায় সংস্থাটির সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বিভাগ) এস এম সোহরাব হোসেন বাণিজ্যিক হিসেবে চিহ্নিত এই চারটি প্লট পুনর্বাসন কাগজের মালিক দাবিদার ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাগৃকের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বোর্ডসভা তা অনুমোদন দেয়। সেখানে আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক করার ফি আদায়ের নামে মূল বিধিবিধান পাস কাটিয়ে যাওয়া হয়।

জাগৃকের ভূমি শাখার কর্মকর্তারা জানান, জাগৃকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয় মূলত সংস্থাটির এ-সংক্রান্ত নীতিমালার আলোকে। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, নকশায় বাণিজ্যিক থাকা প্লট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। সর্বোচ্চ দরদাতা প্লট পাবেন। নীতিমালা অনুযায়ী মিরপুরের ৬ নম্বর সেকশনের ওই চারটি প্লটও নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু কী কারণে তড়িঘড়ি এসব প্লট শ্রেণি পরিবর্তন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা বেশ সন্দেহজনক।

জাগৃকে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, এমন একজন সাবেক কর্মকর্তার সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার কথা হয় আজকের পত্রিকার। তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালের মূল ভলিউম বা রেজিস্ট্রার গায়েব হয়ে যাওয়ায় একটি চক্র ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিমালিক হিসেবে সনদ তৈরি করে পুনর্বাসন প্লট বরাদ্দ নেয়।

সাবেক কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পালনকালে দেখেছি, এসব বরাদ্দের বেশির ভাগ কাগজ ভুয়া, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নামে-বেনামে তা কিনে রেখেছে। তারা সুযোগ বুঝে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে বরাদ্দের অপেক্ষায় থাকে। এ ৪টি প্লটের কাগজ নিয়েও গত এক যুগ ধরে কিছু লোক ঘুরছিল। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা সাহস করেননি। এখন কীভাবে বর্তমান প্রশাসন তা বরাদ্দ দিয়েছে, তারাই ভালো বলতে পারবে।’

এ বিষয় সম্পর্কে জাগৃকের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির আরও বলেন, ‘হাউজিংয়ে কাজ করতে এসে দেখি কিছু দুষ্ট কর্মচারী আছে; যারা নথিপত্র ছিঁড়ে ফেলে নানা অপকর্ম করে থাকে। তাদের বদলি ও শাস্তি দিচ্ছি। এখন তারাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা কথাবার্তা ছড়াচ্ছে বলে মনে হয়।’



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত