Homeদেশের গণমাধ্যমেএইডস রোগীর সিজার নিয়ে দ্বিধায় হাসপাতাল, বিভক্তিতে চিকিৎসকরা

এইডস রোগীর সিজার নিয়ে দ্বিধায় হাসপাতাল, বিভক্তিতে চিকিৎসকরা

[ad_1]

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইডস আক্রান্ত এক প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে দ্বিধা-বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে রয়েছে গর্ভবতী ওই নারীর চিকিৎসা প্রাপ্তির মানবিক চাহিদা, অন্যদিকে অন্যসব রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে সংক্রমণ ঝুঁকি এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্সদের সেফটি সিকিউরিটি। এই দুই বিষয় নিয়ে হাসপাতালে ওই রোগীর ‘ইলেকটিভ সিজার’ বা ঐচ্ছিক সিজারিয়ান অপারেশন প্রশ্নে দ্বিধা-বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে।

আগামী রোববার এই রোগীর অপারেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও গাইনি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, মাস তিনেক আগে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এই নারীর দেহে এইডসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তখন তিনি ছয় মাসের গর্ভবর্তী। এখন এই নারীর সিজারিয়ান অপারেশন প্রয়োজন। কিন্তু এইডস আক্রান্ত এই রোগীর অপারেশন হাসপাতালে করা হলে পরবর্তী ৩ দিন অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। এই নিয়ে অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকের দাবি, একজন রোগীর জন্য হাসপাতালের হাজারো রোগীর সমস্যা হয়, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া কর্তৃপক্ষের উচিত হবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চিকিৎসক জানান, প্রতিদিন হাসপাতালে প্রায় ১৫-২০টি গাইনি প্রসূতি রোগীর সিজার হয়। এছাড়াও সার্জারি ৭-১০টা, অর্থপেডিক্স ৬-৮টা, ইএনটি ৩-৫টি, ডেন্টাল ২-৫টি অতিগুরুত্বপূর্ণ অপারেশন হয়ে থাকে। এই অবস্থায় হাসপাতালে ৩দিন অপারেশন বন্ধ থাকলে এই রোগীরা যাবে কোথায়? এছাড়াও জরুরি সড়ক দুর্ঘটনা, ছুরিকাহত রোগীদের অবস্থা কী হবে? তাই হাসপাতালের চিকিৎসকসহ একাংশের দাবি এইডসে আক্রান্ত প্রসূতিকে বিশেষায়িত হাসপাতালে রেফার করে উন্নত সেবার ব্যবস্থা করা হোক। যেহেতু ওই নারীর ইলেকটিভ সিজারিয়ান অপারেশন এবং ঢাকায় তাকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ও গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যশোরের গর্ভবতী ওই নারীর শরীরে এইচআইভি/এইডস শনাক্ত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। আর পরবর্তীতে রোগীকে কীভাবে চিকিৎসা প্রদান করা হবে সেই চিন্তা শুরু হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। সন্তান জন্মদানের সময় হয়ে আসায় হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার গত ২৮ মে ওই নারীর সিজারের দিন নির্ধারণ করেন। কিন্তু স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তার অভাব থাকায় তিনি করতে পারেননি। পরে আগামী রোববার (১ জুন) নতুন দিন নির্ধারণ করেন ডাক্তার ইয়াসমিন। তবে এরই মধ্যে এই অপারেশন নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নারীর সিজার নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গাইনি চিকিৎসক বলেন, ওই রোগীর অপারেশন কোনো বিষয় না। বিষয়টি হচ্ছে, শরীর থেকে নির্গত রক্ত ও তরল উপকরণ কীভাবে এবং কোথায় নিষ্কাশন ও পরিশোধন করা হবে। সে বিষয়ে হাসপাতালে নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই। শতভাগ প্রস্তুতি ছাড়া এমন রোগীর সিজার করা হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া আতঙ্কে থাকবেন অন্য প্রসূতিরা। তারাও ওটিতে অস্ত্রোপচারে যেতে অনীহা প্রকাশ করবেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, যশোর হাসপাতালে এর আগে (করোনাকালে) এইরকম একটি অপারেশন হয়েছে। এজন্য প্রাথমিকভাবে এই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ওই রোগীকে ২৮ মে সিজার করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এই অপারেশন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এখন গাইনি বিভাগই সিদ্ধান্ত নেবে তারা অপারেশন করবে, নাকি রোগীকে রেফার করবে।

হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রোগী ডাক্তারের কাছে এলে তার চিকিৎসা করা ডাক্তারের ফরজ। আর সেই রোগীকে নিরাপদ রাখার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। গাইনি বিভাগ আগামী রোববার ওই রোগীর সিজারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাকিটা নিশ্চিত করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুদ রানা বলেন, এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত রোগীর সিজার সাধারণ হাসপাতালে করা ঝুঁকিপূর্ণ। আলাদা ও পর্যাপ্ত সুরক্ষাসম্পন্ন হাসপাতালেই এ ধরনের সিজার করা যুক্তিযুক্ত। এজন্য সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকা হাসপাতালে জরুরি।

মিলন রহমান/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত