Homeদেশের গণমাধ্যমেজামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে আপিলের রায় আজ

জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে আপিলের রায় আজ

[ad_1]

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন নিয়ে ও প্রতীক ফিরে পেতে দলটির করা আপিল আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় আজ (রোববার)।

রোববার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে এই রায় ঘোষণার জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।

এর আগে, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন নিয়ে আপিল ও প্রতীক ফিরে পেতে দলটির করা আপিল আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য রোববার (১ জুন) দিন ঠিক করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে ১৪ মে দুপুরে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করেন।

এদিন জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার ইমরার আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার নাজিম মোমেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।

আদেশের দিন ঠিক করার পর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ১ জুন দিন ঠিক করেছেন। আশা করছি আমরা রায়ে নিবন্ধন ফিরে পাব। আর ফুল কোর্ট সভার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা চেয়েছি। আমরা আশা করছি, নিবন্ধনের পাশাপাশি ওইদিন রায়ে আমাদের রাজনৈতিক দল হিসেব দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন আদালত। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দেশের জনগণের মাঝে ফিরে আসবে।

আরও পড়ুন

এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী ২০১৩ সালে এই আপিল করে। আপিলের সঙ্গে ২০১৩ সালে দলটির করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) এবং প্রতীক বরাদ্দ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে করা একটি আবেদনও একই কার্যতালিকায় ওঠে।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ রায় দিয়েছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে দলটির নিবন্ধন দেওয়া অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে অন্য বিচারপতি নিবন্ধন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) করা দলটির আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির পক্ষে মত দেন।

‘আদালতের আদেশে প্রথম নিবন্ধন বাতিল’

আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি সমর্থন করে আপিলকারী পক্ষের আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক শুনানিতে মঙ্গলবার বলেন, আদালতের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল এটিই প্রথম। এছাড়া আপিল বিচারাধীন অবস্থায় ফুল কোর্ট সভার রেজল্যুশনে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক বরাদ্দ না দিতে ইসিকে বলা হয়। প্রশাসনিক এই আদেশের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলটি (জামায়াতে ইসলামী)। আগে ওই প্রতীক নিয়ে দলটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।

ইসির আইনজীবী ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে যা বলেছিলঃ

ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রতীকের তালিকা থেকে দাঁড়িপাল্লা বাদ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ইসির আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এর সঙ্গে নিবন্ধনের বিষয়টি সম্পর্কিত নয়। নিবন্ধন ও প্রতীক দুটি আলাদা বিষয়। এখন তারা (জামায়াত) অন্য কোনো প্রতীক বরাদ্দ চাইলে আইন অনুসারে তা বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে।

কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

চিঠিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে ১২ ডিসেম্বর (২০১৬ সাল) ফুল কোর্ট সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, দাঁড়িপাল্লা ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হোক।

চিঠির শেষাংশে বলা হয়, এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বা কোনো নির্বাচনে প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ প্রদান না করা এবং যদি বরাদ্দ করা হয়ে থাকে, তাহলে ওই বরাদ্দ বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির করা আপিল ও লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আপিলকারীর পক্ষে সেদিন কোনো আইনজীবী না থাকায় আপিল বিভাগ ওই আদেশ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) দেন। পরে বিলম্ব মার্জনা করে আপিল ও লিভ টু আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে দলটির পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২২ অক্টোবর আপিল বিভাগ আবেদন মঞ্জুর (রিস্টোর) করে আদেশ দেন।

এরপর জামায়াতের আপিল ও লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়। এরপর আরও কয়েক দিন শুনানি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এখন আবারও শুনানি হয়। প্রতীক বরাদ্দ বিষয়ে দলটির করা একটি আবেদন গত ১২ মে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে ওঠে। এদিন চেম্বার আদালত ১৩ মে আপিলের সঙ্গে শুনানির জন্য আবেদনটি ট্যাগ (একসঙ্গে) করেন। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি শুনানি হয়।

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা একই বছর আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দলটি।

তবে হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে জামায়াত আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের তৎকালীন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর চেম্বার জজ আদালত। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়।

এফএইচ/এএমএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত