Homeদেশের গণমাধ্যমে১৯৮তম ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া, নিরাপত্তায় জোর

১৯৮তম ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া, নিরাপত্তায় জোর

[ad_1]

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় এবার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চলছে ঈদ জামাতের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সকাল ৯টায় অনুষ্ঠেয় জামাতে ইমামতি করবেন বড়বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়রে মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।

বুধবার (০৪ জুন) সকালে সরেজমিন দেখা যায়, মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রং করাসহ শোলাকিয়া ময়দানকে জামাতের উপযোগী করার কাজ প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে ওজুখানা এবং টয়লেট। চলছে শহরের শোভাবর্ধনের কাজও। তবে গত দুদিন ধরে থেমে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে কিশোরগঞ্জে। এ কারণে বৃষ্টির পানি যেন জমে না যায়, সেজন্য মাঠে ফেলা হচ্ছে বালু। ঠিকঠাক করা হচ্ছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও।

ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুত রাখা হেয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিকেল টিম।  

জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৬ সলের ঈদুল ফিতরে রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার পর থেকে শোলাকিয়ার ঈদের জামাতে নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। যেন লোকজনের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো অস্বস্তি না থাকে। 

জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, ঢাকা  রেঞ্জের পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) কাজেম উদ্দীনসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় মাঠ পরিদর্শন করে সার্বিক প্রস্তুতির খোঁজখবর নিচ্ছেন ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। আজ বেলা ১১টার দিকে মাঠ পরিদর্শন শেষে শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়। 

মাঠের সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান সাংবাদিকদের বলেছেন, এরই মধ্যে মাঠে দাগ কাটা, দেয়ালে রং করাসহ মাঠের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করছি উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, বৃষ্টিবাদল হলে মুসল্লিদের যেন দুর্ভোগ কম হয়, সে ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে।  

পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দীন বলেছেন, নিরাপত্তার দিক থেকে কোনো ঝুঁকি না থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই শোলাকিয়ায় প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। মাঠে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাছাড়া শোলাকিয়া মাঠ ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হবে।

তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শান্তিপূর্ণ ঈদ জামাত। তা করতে গিয়ে যা যা করা দরকার সবই কিছুই করা হচ্ছে।”

পুলিশ সুপার এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, মুসল্লিরা কেবল জায়নামাজ নিয়ে মাঠে প্রবেশ করবেন। এরই মধ্যে মাঠসহ পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জানান, দুই প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিশ্চিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। শহরসহ মাঠের প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচটাওয়ার। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ তল্লাশি করা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে। থাকবে পাঁচটি আর্চওয়ে। তাছাড়া শোলাকিয়া মাঠ ও শহরের যত অলিগলি আছে, সবখানে বসানো হবে নিরাপত্তা চৌকি। 

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের আসা মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষট্রেন চলাচল করবে। সকাল ছয়টায় ভৈরব থেকেছেড়ে আসা ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল আটটায়। পরে এ ট্রেনটিই দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরবের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।

আরেকটি বিশেষ ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে সকাল পৌঁনে ছয়টায় ছেড়ে এসে সকাল সাড়ে আটটায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে। পরে এটি আবার ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে কিশোরগঞ্জ ত্যাগ করবে দুপুর ১২টা।

ঈদুল আজহায় কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা থাকায় জামাতে লোক সমাগম কিছুটা কম হয়। তার পরও লক্ষাধিক মুসল্লি এ জামাতে নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করছে স্থানীয়রা।

কিশোরগঞ্জ শহর থেকে থেকে পূর্ব-দক্ষিণে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকয়িা মাঠ। এর আয়তন ৭ একর। প্রায় দুশো বছর ধরে এই মাঠে বশিাল ঈদরে নামাজরে জামাত হয়ে আসছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, শোলাকয়িার সাহেববাড়ির  সুফি সৈয়দ আহম্মদ ১৮২৮ সালে তার নিজের জমিতে ঈদের জামাতের আয়োজন করেন। বাংলাদশে সরকাররে জাতীয় তথ্য বাতায়নের তথ্য বলছে, ঈদের  প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। পরে উচ্চারণ বিবর্তনে সোয়া লাখ থেকে সোয়ালাখিয়া এবং সেখান থেকে শোলাকিয়া শব্দটি প্রচলিত হয়েছে। 

রেওয়াজ অনুযায়ী শোলাকয়িার ঈদ জামাত শুরুর পাঁচ মিনিট আগে শটগানে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুটি ও এক মিনিট আগে একটি গুলির আওয়াজ করা হয়।  এটি নামাজ শুরু করার সঙ্কতে বলে সংশ্লষ্টিরা জানিয়েছেন।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত