Homeঅর্থনীতি২১% কারখানায় বোনাস নেই

২১% কারখানায় বোনাস নেই


ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে এসে দেখা গেল, দেশে ১ হাজার ৯৯৯টি কারখানার শ্রমিক এখনো ঈদুল আজহার বোনাস পাননি। শুধু তা-ই নয়, ৩৭৫টি কারখানায় এখনো এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া। সরকারের নির্ধারিত সময়সীমা মে মাসের ২৮ তারিখ শেষ হলেও তা মানেননি বহু মালিক; অথচ আর দুই দিন পরই ঈদ।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিদর্শন প্রতিবেদন বলছে, দেশে তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল, বেপজা, পাটসহ নানা খাতে ৯ হাজার ৬৮৩টি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৮৪ কারখানায় বোনাস দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ২১ শতাংশ বা প্রায় এক-পঞ্চমাংশ কারখানা বোনাস দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সবচেয়ে বেশি বোনাস বকেয়া রয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএভুক্ত কারখানাগুলোয়। সংস্থাটির ১ হাজার ৫৪৭ সদস্য কারখানার মধ্যে বোনাস দেয়নি ২৭৯টি—প্রায় ১৮ শতাংশ। বিকেএমইএর ৫৮০টির মধ্যে বোনাস দেয়নি ১৩০টি, বিটিএমইএর ৩৩০টির মধ্যে ৮১টি, আর বেপজার ৪৩১টির মধ্যে বোনাস দেয়নি ৭টি কারখানা।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো, বোনাস বাকি রাখা কারখানাগুলোর অধিকাংশই কোনো সংগঠনের সদস্য নয়। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমইএ বা বেপজার বাইরের ১ হাজার ৫০০টির মতো কারখানায় শ্রমিকেরা এখনো বোনাসের টাকা পাননি। এ অবস্থায় শ্রমিকদের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়েছে।

শুধু বোনাস নয়, এপ্রিলের বেতন বকেয়া রয়েছে ৩৭৫টি কারখানার। এর মধ্যে ৮২টি তৈরি পোশাক ও বেপজার আওতাধীন, যেখানে বিজিএমইএর ৫৬টি, বিকেএমইএর ১১, বিটিএমইএর ১৩ ও বেপজার ২টি কারখানা রয়েছে। বাকি ২৯৩টি কারখানা অন্যান্য খাতের, যেগুলোর একটি বড় অংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক বা সংগঠনের আওতার বাইরে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট, চলমান উৎপাদনে ঘাটতি, ব্যাংকিং সহযোগিতার অভাব এবং শ্রমিক আন্দোলনের কারণে তাঁরা বড় ধরনের আর্থিক চাপে পড়েছেন। অনেকে চাইলেও বেতন-বোনাস দিতে পারেননি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এসব যুক্তি অজুহাত। বছরব্যাপী ব্যবসা করে ঈদের মৌসুমে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা না দেওয়া অমানবিক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ প্রেক্ষাপটে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, তা কার্যকর হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গত ২১ মে শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২৮ মের মধ্যে সব বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ না করলে মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা—গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গ্রহণ করা হবে। ওই দিন জানানো হয়েছিল, পাঁচ মালিকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

বাস্তব চিত্র বলছে, এসব হুঁশিয়ারি মাঠপর্যায়ে তেমন প্রভাব ফেলেনি। বোনাস ও বেতন বকেয়া রেখে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে ঈদের আগে এবং শ্রমিকেরা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত