Homeজাতীয়সুধা সদন এখন কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীর আখড়া

সুধা সদন এখন কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীর আখড়া

[ad_1]

বাড়িটি চারতলা। কোনো ঘরে আসবাব নেই। টাইলসও ভেঙে ফেলা হয়েছে। পোড়া ছাই এখনো রয়েছে। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে বসেছে আড্ডা। যাদের বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছর, মূলত মাদক সেবন করছে তারা। যদিও পুলিশের দাবি, বাড়িটি তাদের নজরদারিতে আছে।

এই চিত্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের। রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ধানমন্ডি ৫/এ-তে শেখ হাসিনার বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে। এর পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত। বাড়িটি এখন মাদকসেবী আর কিশোর গ্যাংয়ের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এতে এ বাড়ির আশপাশের প্রতিবেশীরা একই সঙ্গে বিরক্ত ও আতঙ্কিত। আশপাশের বাড়ির কয়েকজন কেয়ারটেকারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই বাড়িতে চলছে মাদক সেবনসহ নানা ধরনের অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড। ফলে এই বাড়িসংলগ্ন সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরাও ভয়ে থাকেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, চারতলা বাড়িটি পুরোটাই ভগ্নাবস্থায় রয়েছে। ভেতরে ঢুকে বাড়িটির প্রতিটি তলায় দলে দলে বসে আড্ডা দিতে দেখা যায় ১৪-১৬ বছর বয়সী কিশোরদের। এ আড্ডা মূলত মাদকসেবীদের। বেশ কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকেও দেখা যায় মাদক সেবনরত অবস্থায়। দুই ঘণ্টার বেশি সময় বাড়িটির সামনে অবস্থান করেন এই প্রতিবেদক। এ সময় অনেকের সঙ্গে নারীদেরও বের হতে দেখা যায় এই বাড়ি থেকে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, কোনো নজরদারি না থাকায় প্রায় সারা দিন এভাবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, মাদকসেবী এবং নারীদের নিয়ে অনেকে এ বাড়িতে ঢোকে; বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এমন ঘটনা বেশি ঘটে। ধানমন্ডি লেক এলাকার অপরাধের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ভবনটি। এসব সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো তৎপরতা কিংবা নজরদারি তাঁদের চোখে আসেনি।

সুধা সদনের উল্টো দিকের বাড়ির কেয়ারটেকার জামেন সিনহা বলেন, দু-তিন মাস ধরে এই বাড়ি ঘিরে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এখানে আসা অধিকাংশের বয়স ১৬ বছরের বেশি নয়। সন্ধ্যার পর থেকে সারা রাত ভেতরে নেশা করে তারা।

নাম না প্রকাশের শর্তে সুধা সদনসংলগ্ন আরেকটি বাড়ির কেয়ারটেকার বলেন, ‘আপনি এখানে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেই বুঝে যাবেন, ভেতরে কী চলে। আমরা ভয়ে থাকি, কাউকে কিছু বলি না। কম বয়সী উচ্ছৃঙ্খল ছেলেদের আড্ডাখানা হয়ে গেছে এই জায়গা। মেয়ে নিয়েও অনেকে আসে। এই জায়গায় পুলিশও আসে না।’

সুধা সদনসংলগ্ন সড়ক দিয়ে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন আহমেদ ফারাবী। তিনি বলেন, ‘আমার বাসা এলিফ্যান্ট রোডে। ওই দিকে হাঁটার মতো খোলামেলা জায়গা নেই, তাই এদিকে আসি। এখানে যখনই আসি, অনেককে দেখি নারী নিয়ে বের হচ্ছে বা ঢুকছে। তবে বেশি দেখা যায় কিশোর ছেলেদের।’

তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি জিসানুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাড়িটি আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এর ফাঁকে যদি কেউ কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করে, তবে তাকে আইনের আওতায় আনবে পুলিশ। অপরাধী কেউ ছাড় পাবে না।’

সুধা সদনের পাশের বাড়ির বাসিন্দা নিরঞ্জন বলেন, ‘ভাঙচুর হওয়ার পর এই বাড়ি ঘিরে কিছুদিন আমাদের এলাকায় চোরের উৎপাত বেড়েছিল। তাই আমরা প্রথম কিছুদিন নজরদারিতে রেখেছিলাম। পরে ধীরে ধীরে আশপাশের এলাকার নেশাগ্রস্তদেরও আড্ডায় পরিণত হয়েছে এটি। ছোট-বড় তফাত নাই, সব বয়সের লোকই আসে এখানে। আমরা নিরাপত্তাঝুঁকিতে আছি।’

সুধা সদনের আশপাশ অবস্থানকালে সেখান থেকে বের হতে দেখা যায় এক যুবককে। ‘ভেতরে গেলে সমস্যা হবে কি না’ জানতে চাইলে ওই যুবক বলেন, ‘যাওয়া যাবে, তবে বেশিক্ষণ থাকবেন না। বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা গাঁজা খেয়ে বুঁদ হয়ে থাকে। আপনি আপনার মতো গিয়ে কাজ সেরে চলে আসেন। কারও সঙ্গে কথা বলার দরকার নাই।’



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত