Homeখেলাধুলাচোকার্স তকমা ছুড়ে ফেলে বিশ্বজয় দক্ষিণ আফ্রিকার

চোকার্স তকমা ছুড়ে ফেলে বিশ্বজয় দক্ষিণ আফ্রিকার

[ad_1]

দীর্ঘদিন ধরে ‘চোকার্স’ তকমা বয়ে বেড়ানো দক্ষিণ আফ্রিকা অবশেষে ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফরম্যাটে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল। লর্ডসে হওয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট পরেছে প্রোটিয়ারা। হতাশা, ব্যর্থতা আর আক্ষেপের অধ্যায় পেছনে ফেলে এই ঐতিহাসিক জয়ে নতুন করে শুরু করল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাস।

দীর্ঘদিনের হতাশা, ভাঙা স্বপ্ন আর চাপা কান্নার অধ্যায় অবশেষে পেছনে ফেলে এল এক নতুন সূর্যোদয়। আইসিসির কোনো ট্রফি জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ২৭ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো অবশেষে। ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বে প্রোটিয়ারা অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিজেদের করে নিলো।

এই জয় ছিল না শুধুই আরেকটা ম্যাচজয়। এটি ছিল মুক্তি। যেসব সমর্থক ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পোলকের কান্না দেখেছেন, যারা ২০১৫ তে ফাফ ডু প্লেসির হতভাগ্য দলকে দেখেছেন বিদায় নিতে— এই জয় তাদের সকলের। এবার আর ‘চোকার্স’ অপবাদে মাথা নত হয়নি প্রোটিয়াদের। এবার তারা মাথা উঁচু করে বিশ্ব জয় করলো।

ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকেছে অস্ট্রেলিয়া। উসমান খাজা শূন্য রানে ফিরেন ২০ বল খেলেই। স্টিভেন স্মিথ কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও ৬৬ রানের বেশি যেতে পারেননি। কিন্তু ক্যাগিসো রাবাদার আগুনে বোলিংয়ের সামনে তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে রাবাদা অজি ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান। ইয়ানসেন নেন ৩টি। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ২১২ রানে।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং ধসে পড়ে প্যাট কামিন্সের মারাত্মক স্পেলের সামনে। মাত্র ২৮ রানে ৬ উইকেট নিয়ে একাই ধ্বংস করেন প্রোটিয়াদের ব্যাটিং অর্ডার। বেডিংহ্যাম (৪৫) ও বাভুমা (৩৬) ছাড়া কেউই দাঁড়াতে পারেননি। ইনিংস শেষ হয় ১৩৮ রানে— ৭৪ রানে পিছিয়ে থেকে।

কিন্তু এখানেই গল্পের শেষ নয়।

দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা ঘুরে দাঁড়ালেন দুর্দান্তভাবে। লুঙ্গি এনগিদি তুলে নেন স্মিথ ও ওয়েবস্টারের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। রাবাদা ফেরেন না খালি হাতে— ক্যারি ও লায়নকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন। মিচেল স্টার্ক লড়াই করেছেন ৫৮* রানে, কিন্তু দলকে ২০৭ এর বেশি যেতে দেননি প্রোটিয়া বোলাররা। লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮২ রান।

আর সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা পেল তাদের এক মহাকাব্যিক ইনিংস— আইডেন মার্করামের ব্যাটে। চতুর্থ ইনিংসে চাপের মুখে ২০৭ বলে ১৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দেন তিনি। সাথে ছিলেন অধিনায়ক বাভুমা (৬৬), যিনি না শুধু সাহসিকতা দেখিয়েছেন, বরং নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বপ্নপূরণের।

তাদের ১৪৭ রানের জুটি ভেঙে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সব পরিকল্পনা। শেষে বেডিংহ্যাম ও ভেরেইনে বাকি কাজ সেরে দলকে এনে দেন কাঙ্ক্ষিত জয়।

জয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লর্ডসের ব্যালকনি থেকে উল্লাস ভেসে আসে। ক্যামেরা বন্দি করে বাভুমার চোখের জলে মিলিয়ে যাওয়া ক্লান্তি, রাবাদার গর্জন আর মার্করামের নীরব আনন্দ। এক প্রজন্ম ধরে যে ব্যর্থতার বোঝা বয়ে বেড়িয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, অবশেষে তা নামিয়ে রাখা গেছে লর্ডসের সবুজ ঘাসে।

দক্ষিণ আফ্রিকার এই সাফল্য হঠাৎ করে আসেনি। এটি গড়ে উঠেছে বারবার হৃদয়ভাঙা থেকে শেখার মাধ্যমে। এজবাস্টন ১৯৯৯, অকল্যান্ড ২০১৫, ম্যানচেস্টার ২০১৯— প্রতিটি কষ্ট আজ যেন পূর্ণতা পেলো লর্ডসের সবুজ গালিচায়।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত