Homeদেশের গণমাধ্যমেপুলিশের দুই কর্মকর্তা গ্রেফতার: কী বলছেন সহকর্মীরা?

পুলিশের দুই কর্মকর্তা গ্রেফতার: কী বলছেন সহকর্মীরা?

[ad_1]

পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে গ্রেফতার নিয়ে খোদ পুলিশেই নানামুখী আলোচনা চলছে। এই দুজনের একজন বিসিএস ২২ ব্যাচের কর্মকর্তা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার মহিউদ্দিন ফারুকী। আরেকজন ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন। দুজনকেই গত মঙ্গলবার রাঙামাটি ও বরিশাল থেকে গ্রেফতার করে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তারা কেউ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন না। আলেপ উদ্দিন ছিলেন পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে। আর মহিউদ্দিন ফারুকী ছিলেন রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। এদের হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো নিয়ে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তাদের একাধিক সহকর্মী।

পুলিশ সূত্র জানায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বেশ কয়েক বছর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন। তার আগে র‌্যাব-১১-তে কাজ করেছেন। পরে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবিতে তার বদলি হয়। জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তিনি এসবিতে কর্মরত ছিলেন। পটপরিবর্তনের পর তাকে বরিশালে বদলি করা হয়।

আলেপ উদ্দিনের এক ব্যাচমেট জানান, সাধারণত ক্রাউড কন্ট্রোল বা কোনও দাঙ্গা-হাঙ্গামার সময় এসবির কোনও সদস্য অস্ত্র হাতে দায়িত্ব পালন করেন না। এসবির মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা তথ্য সংগ্রহ করেন। এছাড়া এসবিতে দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তার তো মাঠেই যাওয়ার কথাই না। সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোটা অযৌক্তিক ও অনভিপ্রেত।

পুলিশের আরেক কর্মকর্তা জানান, মহিউদ্দিন ফারুকীকে ২০২৩ সালে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর আগেই তিনি রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে কর্মরত ছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত থাকা একজন কর্মকর্তা কোনোভাবেই ডিউটিতে থাকার কথা নয়। অথচ তাকেও যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মহিউদ্দিন ফারুকী একসময় র‌্যাব-২-এর কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বেনজীর আহমেদ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) থাকা অবস্থায় তিনি পুলিশ সদর দফতরের লজিস্টিক শাখার দায়িত্বে ছিলেন। বেনজীর আহমেদের যোগসাজশে তিনি কেনাকাটায় দুর্নীতি করে থাকতে পারেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান হওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কোনোভাবেই হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোটা সমীচীন হয়নি। এসব ঘটনায় মনে হচ্ছে পুলিশ মিথ্যা মামলায় নিজেদের সহকর্মীদেরই হয়রানি করছে।

অবশ্য যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ জানিয়েছে, যে মামলায় মহিউদ্দিন ফারুকীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই মামলায় মহিউদ্দিন ফারুকী এজহারনামীয় আসামি ছিলেন। এজন্যই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার এসআই রাসেল সরদার জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আলেপ উদ্দিন ও মহিউদ্দিন ফারুকীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে গণহারে মামলা হতে থাকে। সরাসরি থানা ছাড়াও আদালতেও অনেকে মামলা করেন। কোথাও কোথাও মামলা না নিতে চাইলে থানা পুলিশ এবং আদালতকেও বাধ্য করার মতো ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে ছিলেন না এমন ব্যক্তিদের গণহারে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হলে সরকারের পক্ষ থেকে ‘মামলা হলেই গ্রেফতার নয়’ নীতির কথা বলা হয়েছিল।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে পুলিশের সব ইউনিটের কাছে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার কার্যবিবরণীও পাঠানো হয়। সেই কার্যবিবরণীর দুই নম্বর ক্রমিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকালীন হত্যাকাণ্ড/ঘটনায় দায়ের সংক্রান্ত বিষয়াদি কলামে দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই দুটি সিদ্ধান্ত হলো––ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে নিহতের পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির বিভিন্ন আদালত/থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার না করা। আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো––জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক দায়ের করা হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্ত করে কোনও কর্মকর্তা/ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া।

পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশ সদর দফতর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সেই নির্দেশনা না মেনে খোদ পুলিশ কর্মকর্তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এসব পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের জন্য অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকুক আর না থাকুক, বর্তমান সময়ে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা পুলিশের কোনও কোনও সদস্য ব্যক্তিগত আক্রোশ ও আওয়ামী লীগের অনুসারী সন্দেহে হত্যা মামলায় গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানি করছে। নতুন করে আরও শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরও বিভিন্ন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত