[ad_1]
ঢালাওভাবে মামলা না দিতে সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, কোনও ভুক্তভোগী মামলা দিলে আমরা নিষেধ করতে পারি না। তবে পুলিশকে দ্রুত তদন্ত করে মামলার নামে যাদের হয়রানি করা হচ্ছে তাদের বাদ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
মামলার নামে হয়রানির বিষয়ে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা তো বলেছি ঢালাওভাবে যেন মামলা না দেওয়া হয়। তবে যে কেউ মামলা দিতেই পারে। কিন্তু যার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ নেই, সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে তাদের যেন বাদ দেওয়া হয়।
শফিকুল আলম বলেন, কোনও ভুক্তভোগী যদি মামলা দেয়, তাকে তো আমরা বলতে পারি না, আপনি মামলা দিয়েন না। তবে পুলিশকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দ্রুত তদন্ত করে মামলার নামে যাদের হয়রানি করা হচ্ছে তাদের বাদ দেওয়ার জন্য। যাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই, তাদের যেন দ্রুত বাদ দেওয়া হয়।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত সরকার নেবে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের অংশীজন। তাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত হবে— ১৯৭২ সালের যে সংবিধান হয়েছে সেটি সংশোধন হবে নাকি হবে না। সেটা ওনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সবার সঙ্গে কথা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বাংলাদেশে যত আদিবাসী কমিউনিটি আছে— তাদের সবার সঙ্গে কথা হবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনও ধরণের কনফিউশন দেখছি না।
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে বিএনপি আশাহত— এ বিষয়ক প্রশ্নের জবাবে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করাতো নির্বাচনি রোডম্যাপের অংশ।
সংস্কার কমিশনের সদস্যদের বিষয়ে নানান মহলের আপত্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কমিশনের প্রধানদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, গণমাধ্যমের যে কাঠামোগত পরিবর্তন আমরা চাচ্ছি তার জন্য ভালো একটা প্রতিবেদন ওনারা তৈরি করতে পারবেন বলে আশা করি।
জেনেভায় আইন উপদেষ্টার নিরাপত্তার গাফিলতির বিষয়টি সরকার তদন্ত করছে বলে জানান অপূর্ব জাহাঙ্গীর। দায়িত্ব নেওয়া দুই উপদেষ্টার বিষয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, মানুষ তাদের মতামত দিচ্ছে, আমরা দেখছি।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, অনেক সমস্যা আছে যেগুলো একদিনে শেষ হয় না। তিতুমীর কলেজের ভাই-বোনদের বলবো, আপনারা শান্ত হোন। আপনাদের সঙ্গে অবশ্যই কথা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এটার আশু সমাধান হবে।
দুই-একটা কারখানা ছাড়া অন্য কোনও পোশাক কারখানায় অস্থিরতা নেই বলে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, তার প্রভাব পড়েছে রফতানিতে। গত মাসে ২১ শতাংশ রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকারের মেয়াদ: আল জাজিরার বক্তব্য ভালো মতো না শুনে হেডলাইন দিচ্ছে গণমাধ্যম
সরকারের মেয়াদ নিয়ে আল জাজিরা টেলিভিশনকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকার বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন— সংবিধানের বিষয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে, সেখানে বলা হচ্ছে সংসদের মেয়াদ চার বছরে আনা হোক। এটা কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে না। তখন ওনাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার ক্ষেত্রেও চার বছর কিনা? তারপর বলেছেন, চার বছরের কম। এখানে পরিষ্কার করা হয়েছে, চার বছরের কথা বলা হয়নি। আপনারা ভালোমতো শুনেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অনেকেই ভালোমতো না শুনে একটা হেডলাইন দিয়ে দিচ্ছেন।
গত বছর কাঁচা মরিচের দাম ১২শ টাকা হয়েছিল
সরকারের ১০০ দিন পূর্তিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির দেওয়া প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের নাগালে রাখার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সরকারের উদ্যোগের কারণে ডিমের দাম কমেছে। অন্যান্য দ্রব্যের দামও নিম্নমুখী। গত বছর কাঁচা মরিচের দাম ১২শ টাকা পর্যন্ত হয়েছিল। আমাদের চেষ্টার অন্ত নেই। আমরা দেখলাম দুটো পত্রিকায় আলুর দাম চার শ’ টাকা। এমন একটা তথ্য দিচ্ছে মনে হচ্ছে মূল আলুর দামই চার শ টাকা। এটা খণ্ডিত চিত্র। মিসলিডিং প্রতিবেদন।
সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়ে সরকার সচেতন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, পুলিশের দেওয়া অপরাধ পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে আইনশৃঙ্খলার ভালো উন্নতি হয়েছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ভালোর দিকে যাচ্ছে।
প্রশাসনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, যাদেরকে আমরা যোগ্য মনে করছি, যারা কাজগুলো করতে পারবেন, প্রশাসনে ডায়নামিজম (গতিশীলতা) আনতে পারবেন তাদের নেওয়া হচ্ছে। যাদের নেওয়া হচ্ছে তাদের ভালো ট্র্যাক রেকর্ড আছে।
আন্দোলনের কারণে আরব আমিরাতের জেলে বন্দি বাংলাদেশিদের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি সেরকম অবস্থা হলে জানানো হবে।
অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের পরও আবেদনের সুযোগ রয়েছে
সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলের কারণে নানান আলোচনা-সমালোচনা চলছে— এ নিয়ে সরকারের ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, পিআইডির অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল হওয়ায় যেসব সাংবাদিক মনে করছেন তাদের প্রতি অবিচার হয়েছে, তাদের আবার আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। তারা যদি আবেদন করে এবং সরকার যদি মনে করে তাদের যৌক্তিকভাবে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে।
বিগত সরকারের বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৫ হাজার অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হয়। সেখান থেকে ১৬৭ জন সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। আমরা মনে করি না সংখ্যাটা খুব বেশি। গত সরকারের সময় অনেককে দলীয় পরিচয়ে সাংবাদিক অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। তারা এ কার্ডের অপব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তদবিরসহ নানান কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
[ad_2]
Source link