Homeদেশের গণমাধ্যমেএকজন ফুটবলযোদ্ধাকে শেষ বিদায় দিতে নবীন-প্রবীন তারকার ঢল

একজন ফুটবলযোদ্ধাকে শেষ বিদায় দিতে নবীন-প্রবীন তারকার ঢল

[ad_1]

জীবদ্দশায় একটি আবেদন বার বার করেছেন জাকারিয়া পিন্টু। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক, স্বাধীনতা ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া কিংবদন্তি ফুটবলার দেখতে চেয়েছিলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যে দলটি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ম্যাচ খেলে প্রাপ্ত অর্থ জমা দিয়েছিলেন সরকারী তহবিলে সেই দলটিকে যেন স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।

স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও ঐতিহাসিক ২৫ জুলাই দিনগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় এই একটি দাবির কথা বলতে ভুলতেন না দেশের ফুটবলের ইতিহাসে সেরা এ ডিফেন্ডার। ভবিষ্যতে কোনোদিন এই দাবি পূরণ হলেও জাকারিয়া পিন্টু পৃথিবী ছেড়ে অন্তলোকে চলে গেছেন সেই আফসোস নিয়েই।

মঙ্গলবার সকালে জাকারিয়া পিন্টু শেষবার এসেছিলেন তার প্রিয় ক্লাব মোহামেডানে। অন্য সববার আসার মত নয় এবারের আসা। এবার তিনি এলেন, কফিনবন্দী হয়ে। মূলত তাকে মোহামেডান ক্লাব প্রাঙ্গনে শেষবারের মত নিয়ে আসা হয়েছিলো।

ক্রীড়াঙ্গনে এখানেই হয়েছে তার প্রথম জানাজা। দ্বিতীয় জানাজা হয়েছে বাফুফে ভবনের সামনের মাঠে। তার আরেকটি পদচারণার জায়গা ছিল জাতীয় প্রেসক্লাব। সেখানে জানাজা শেষে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা করবস্থানে।

জাকারিয়া পিন্টু ছিলেন ফুটবলযোদ্ধা, ফুটবলবীর। ফুটবল পায়ে লড়াই করেছিলেন মহান স্বাধীনযুদ্ধের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে। এই বীরমুক্তিযোদ্ধা শেষবার তার প্রিয় ক্লাব মোহামেডান থেকে পেয়েছেন রাজসিক সম্মান।

মুক্তিযোদ্ধা জাকারিয়া পিন্টুকে ঢাকা জেলা প্রশাসন রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান করেছে মোহামেডান চত্বরে জানাজা নামাজের আগে। জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল তার কফিন। এই সম্মান, ভালোবাসা সবকিছু থেকে জাকারিয়া পিন্টু তখন অনেক দূরে। কোনো কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না। তিনি জানতেও পারবেন না তাকে কিভাবে শেষ বিদায় জানানো হয়েছিলো। সেই ক্ষণে কারা ছিলেন, কারা চোখের পানি মুছেছেন!

সতীর্থ মেজর (অব.) হাফিজ, প্রতাশ শংকর হাজরা, আশরাফ আলী, সুভাস চন্দ্র সাহা যেমন এসেছিলেন অধিনায়কের শেষ বিদায় অনুষ্ঠানে, তেমন এসেছিলে তার অনুজরা। কেবল ফুটবলই নয়, ক্রিকেট, হকিসহ আরো কয়েকটি খেলার সাবেক-বর্তমান তারকারা মোহামেডান ক্লাবে উপস্থিত হয়ে বিদায় জানিয়েছেন এই ফুটবলবীরকে।

জাকারিয়া পিন্টুর শেষ বিদায় দিতে বিভিন্ন খেলার তারকাদের ঢল নেমেছিল। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বেশি ছিলেন ফুটবল অঙ্গনের মানুষ। মোহামেডান ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, স্থায়ী সদস্য এবং সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়রা কফিনে ফুল দিয়ে শেষ বিদায় জানিয়েছেন তাদের প্রিয় জাকারিয়া পিন্টুকে।

টানা ৮ বার মোহামেডানের অধিনায়কত্ব করা জাকারিয়া পিন্টু পরবর্তীতে ক্লাবটির কোচ ও কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন পরিচালকও। খেলা ছেড়ে দিয়ে মোহামেডান অন্তপ্রাণ পিন্টু জীবন জড়িয়ে রেখেছিলেন মোহামেডানের সাথেই।

বিগত কিছুদিন দিন ক্লাবে আসতে পারেননি অসুস্থতার কারণে। এর আগে নিয়মিতই জাকারিয়া পিন্টুকে পাওয়া যেতো ক্লাবে এবং ক্লাবের ফুটবল ম্যাচে স্টেডিয়ামে।

মোহামেডানে জীবন-যৌবন কাটিয়ে দেওয়া পিন্টুর মরহেদ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি যখন ক্লাব ত্যাগ করছিল তখন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চোখ ছলছল করছিল। প্রিয় ও সম্মানিত মানুষটিকে তারা আর কখনো দেখতে পারবে না।

আরআই/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত