বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, কিছুদিন আগে দেশের পূর্বাঞ্চলের প্রলয়ংকারী বন্যার হয়। এরপর গত মাসের শেষ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা প্রবল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছে, দুর্ভোগ বেড়েছে অতি মাত্রায়। মৌসুমি বৃষ্টি এবং উজানের পাহাড়ি ঢলেই এ বন্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় রুহুল কবির রিজভী বন্যা প্রতিরোধে ছয় দফা দাবি পেশা করেন।
দাবিগুলো হলো–
১.বন্যার পানিতে যাদের জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, সঠিক তালিকা তৈরি করে আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত তাদের সর্বাত্মক ত্রাণ সহায়তা দেওয়া; আগামী ফসলের জন্য সুদমুক্ত কৃষি ঋণ দেওয়া ও বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচের তেলের ব্যবস্থা করা; আগামী ফসলের আগে রবি শস্য উৎপাদনের জন্য তাদের রবি শষ্যের বীজ দেওয়া।
২. বন্যার পানিতে যে সব মাছ, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশুর খামার নষ্ট এবং মৎস্য, হাঁস-মুরগি গবাদি পশু ধ্বংস হয়ে গেছে, তার সঠিক তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে পুনরায় খামার প্রতিষ্ঠার জন্য সুদমুক্ত ঋণসহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়া।
৩. বন্যার পানিতে যাদের বাড়ি-ঘর আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদের তালিকা করে ঘর-বাড়ি পুনর্নির্মাণে সহায়তা করা; নদীর বাঁধ ভেঙে যে সব গ্রাম-পাড়া-মহল্লা বিলীন হয়ে গেছে, সেসব স্থানে বসবাসকারীরা বর্তমানে উদ্বাস্তু হয়ে গেছে, তাদের সরকারি খাস জমিতে বা আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তরিত করা।
৪. ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, রাস্তা, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ ধর্মীয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও পুণর্নির্মাণ করা।
৫. বন্যার পানিতে যেসব ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষা সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে, সরকারি উদ্যোগে তাদের শিক্ষা সামগ্রী ও সহায়তা দেওয়া।
৬. বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে রোগ-বালাইগ্রস্ত মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে চিকিৎসা দেওয়া।
রিজভী বলেন, ‘ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রকোনা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। ময়মনসিংহ বিভাগে কংস, জিঞ্জিরাম, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদসহ সমেশ্বরী নদীগুলোর পানি অতিমাত্রায় উপচে পড়ে আশপাশের অঞ্চল তলিয়ে দিয়েছে। শেরপুর জেলার ভোগাই নদ, নাকুয়াগাঁও ও জামালপুর জেলার নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।’