Homeঅর্থনীতিবাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের রেটিং ‘অতি দুর্বল’ পর্যায়ে নামাল মুডিজ

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের রেটিং ‘অতি দুর্বল’ পর্যায়ে নামাল মুডিজ

[ad_1]

ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতার অভাব, আর্থিক সুরক্ষার ঘাটতি ও গ্রাহকের আস্থার অবনতি উল্লেখ করে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের রেটিং কমিয়েছে মুডিজ। বিশ্বখ্যাত ‘ক্রেডিট রেটিং’ সংস্থা মুডিজ গতকাল মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এর এক দিন আগে, সংস্থাটি বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং বি১ থেকে কমিয়ে বি২ করেছে। পাশাপাশি স্থিতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে ‘নেতিবাচক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এই ক্রেডিট রেটিং কমানোর অর্থ হলো—দেশের ব্যাংকিং খাত আরও দুর্বল হওয়া। যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ আরও কঠিন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছে এবং এর ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। পাশাপাশি আর্থিক অস্থিতিশীলতা, কম প্রবৃদ্ধি এবং ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। এগুলো ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা ও মুনাফার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মুডিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (বাংলাদেশ ব্যাংক) সম্পদের মান উন্নত করার উদ্যোগের কারণে স্বল্পমেয়াদে অপরিশোধিত ঋণের (এনপিএল) সংখ্যা বাড়বে। তবে এটি সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’ সংস্থাটি আরও বলেছে, সম্পদের মান সংক্রান্ত ঝুঁকি বাড়লেও অধিকাংশ ব্যাংকের তহবিল ও তারল্য তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত একের পর এক সংকটে পড়েছে। অপরিশোধিত ঋণ বেড়েছে, তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং শাসনব্যবস্থায় দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের অপরিশোধিত ঋণ বেড়ে রেকর্ড ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে মূলত ঋণ ঝুঁকি মূল্যায়নে দুর্বলতা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের শিথিল তদারকির কারণে।

বিগত কয়েক বছরে ব্যাংকিং খাতে অপরিশোধিত ঋণের ক্ষেত্রে কিছু বেসরকারি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বড় ধরনের কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিল। এসব ঋণ প্রধানত আগের আওয়ামী লীগ সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। ফলে ব্যাংকিং খাতে জনগণের আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে তারল্য সংকটসহ নানাবিধ কার্যক্রমগত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

মুডিজ তাদের সার্বভৌম রেটিং বিশ্লেষণে বলেছে, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট অনেক ঋণই খেলাপি হবে। এর ফলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার গঠনগত দুর্বলতা আরও বাড়বে।’ এতে ব্যাংকিং খাত সংস্কারে সরকারের আর্থিক ব্যয় বেড়ে যাবে বলেও মনে করে মুডিজ। সংস্থাটি বলেছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় দুর্বল শাসনব্যবস্থা সম্পদের মানের সংকটে ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি, নীতিমালার অবনতি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।

সার্বভৌম রেটিংয় নামিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মুডিজ ছয়টি বাংলাদেশি ব্যাংকের রেটিংও কমিয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো—ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক।

ব্র্যাক ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রার আমানত রেটিং বি১ থেকে কমিয়ে বি২ করা হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং বি২ থেকে কমিয়ে বি৩ করা হয়েছে। তবে সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের রেটিং বি২ অবস্থানে বহাল রাখা হয়েছে। মুডিজ বলেছে, ‘আমরা এই ছয় ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি আমানত রেটিংয়ের দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচকে পরিবর্তন করেছি।’

উল্লেখ্য, ব্যাংকিং খাতে যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের রেটিং বি১ থাকে, তখন ধরা হয়—ব্যাংকটির দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা আছে এবং বি২ রেটিংয়ের অর্থ হলো, এসব ব্যাংক আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ব্যাংকে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী ও দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত