Homeঅর্থনীতিঘুষকাণ্ডে চাচা–ভাজিতার জুটি, যেভাবে উঠে এল আদানির ভাতিজা সাগরের নাম

ঘুষকাণ্ডে চাচা–ভাজিতার জুটি, যেভাবে উঠে এল আদানির ভাতিজা সাগরের নাম

[ad_1]

যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা ভারতের আদানি গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ এনেছে। নথিতে তাঁরা গৌতম আদানির ভাতিজা সাগর আদানির ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেছেন। আদানি গ্রুপের সহ–প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির ভাতিজা সাগর আদানি তাঁর মোবাইল ফোনে ভারতের কর্মকর্তাদের দেওয়া ঘুষের পরিমাণ, সরকারি কর্মকর্তার নাম এবং এর বিনিময়ে কত পরিমাণ সৌর বিদ্যুৎ ক্রয় করা হবে—এমন তথ্য রয়েছে। আদালতের নথি অনুযায়ী, এই তথ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটরেরা ‘ঘুষ নোট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এই ঘুষের নোটে সাগর আদানি ঘুষের পরিমাণ, কাকে ঘুষ দেওয়া হয়েছে এবং কত মেগাওয়াট বিদ্যুতের বিনিময়ে এটি হয়েছে—তার বিবরণ উল্লেখ করেছেন। তিনি মেগাওয়াট প্রতি ঘুষের হারও উল্লেখ করেছেন। ২০২০ সালে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে সাগর আদানি বলেন, ‘হ্যাঁ…কিন্তু বিষয়টা দৃশ্যমান হওয়ার ঠেকানো বেশ কঠিন।’

আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ

গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটরেরা সাগর আদানি, গৌতম আদানি এবং আরও ছয়জনের বিরুদ্ধে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের একটি দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি পেতে এই অর্থ দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে ২০ বছরে ২ বিলিয়ন ডলার মুনাফার আশা করেছিলেন তাঁরা।

একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) এ অভিযোগ নিয়ে একটি সমান্তরাল দেওয়ানি মামলা দায়ের করেছে।

আদানি গ্রুপ এক বিবৃতিতে এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছে। তারা এই বিষয়ে ‘সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ’ নেবে বলে জানিয়েছে।

সাগর আদানির পটভূমি

কয়েক মাস আগে গৌতম আদানি তাঁর অবসর পরিকল্পনা স্পষ্ট করেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি উত্তরাধিকার পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী, আদানি পরিবার একটি পারিবারিক ট্রাস্টের অধীনে গৌতম আদানির দুই ছেলে এবং দুই ভাতিজা সমান অংশীদার হবে। গৌতম আদানি তাঁর উত্তরাধিকারীদের একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে নিয়োগ করেছেন এবং গৌতম আদানির ছেলে করণ ও জিত আদানি এবং ভাতিজা প্রণব ও সাগর সমান অংশীদার। প্রণব হলেন গৌতম আদানির বড় ভাই বিনোদ শান্তিলাল আদানির ছেলে এবং সাগর তাঁর দ্বিতীয় ভাই রাজেশ আদানির ছেলে।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর সাগর আদানি (৩০) আদানি গ্রুপে যোগ দেন। সাগর আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ ব্যবসা এবং আর্থিক দিক পরিচালনা করেন, পাশাপাশি আদানি গ্রিন এনার্জির সৌর ও বায়ু শক্তির পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠার কৃতিত্বও তাঁর।

সাগর আদানি বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে মনোনিবেশ করছেন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নবায়নযোগ্য জ্বালানি পার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছেন। আদানি গ্রুপের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, সাগর আদানি বর্তমানে আদানি গ্রিন এনার্জির কোম্পানি সংগঠন কাঠামো, কৌশলগত ও আর্থিক দিকগুলো দেখভাল করছেন।

ঘুষের নোট এবং আদালতের নথি

প্রসিকিউটরদের তদন্তে দেখা গেছে, সাগর আদানি তাঁর ‘ঘুষের নোট’–এ ঘুষ দেওয়ার বিবরণ সংরক্ষণ করতেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা এই অনুমোদনের জন্য প্রণোদনা দ্বিগুণ করেছি।’

২০২১ সালের জুলাই মাসে সাগর আদানি ভারতের ওডিশা রাজ্যে সরকারকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে রাজি করাতে কয়েক লাখ ডলারের ঘুষ দেন। এর এক মাস পর তিনি এবং গৌতম আদানি অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ঘুষের প্রস্তাব দেন বলে আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘুষের টাকা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা

২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে, গৌতম আদানি এবং সাগর আদানি একাধিকবার ভারতের একটি বিদ্যুৎ সংস্থা আজুর–এর চেয়ারম্যান এবং অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকগুলোতে তাঁরা আজুর–এর কাছ থেকে ঘুষের অংশ আদায়ের চেষ্টা করেন। আজুর এক বিবৃতিতে বলেছে যে, তারা তাদের সাবেক পরিচালক এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করছে।

২০২০ সালে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক আলোচনায় সাগর আদানি বলেছিলেন, ‘ব্যবসায় আপনি যা কিছুই করেন, প্রতিটি কাজের সঙ্গে অবশ্যম্ভাবীভাবে ঝুঁকি জড়িত।’



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত