Homeদেশের গণমাধ্যমেঅবুঝ তাজকিয়া খুঁজে ফিরছে বাবাকে

অবুঝ তাজকিয়া খুঁজে ফিরছে বাবাকে

[ad_1]

আড়াই বছরের শিশু কন্যা তাজকিয়া। মাত্রই কথা বলতে এবং একপা-দুপা করে হাঁটতে শিখেছে। দুনিয়ার অনেক কিছু তার এখনো অজানা। তবুও তার চোখে যেন বাবাকে দেখার এক ধরনের ক্ষুধা। বাবা, বাবা করে খুঁজে ফেরে সে সারাটাদিন। সপ্তাহে দু-একবার দেখা হত বাবার সঙ্গে। বড়ই আনন্দে দিন কাটছিল তার।

তবে গত সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ঘটে যাওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে চালানো সংঘর্ষে যেন নিমিষেই তার জীবনের সব আনন্দ শেষ করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে তাজকিয়ার বাবাকে।

সেই সঙ্গে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে লোহাগাড়া সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। লোহাগাড়া সর্বস্তরের জনসাধারণের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল থেকে অপরাধীদের বিচার দাবি করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষোভকারীরা আমার ভাই মরল কেন, জবাব চাই, জবাব চাই স্লোগান দিতে থাকেন।

এ ছাড়াও নিহতের স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিনের বাড়ি লোহাগাড়া সদর সওদাগর পাড়ায়ও আত্মীয়স্বজন ভিড় করে। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

নিহতের স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিনের বড় ভাই তারেকুল ইসলাম বলেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের সঙ্গে তার বোন তারিনের বিয়ে হয় সাড়ে তিন বছর আগে।

তাদের পরিবারে তাজকিয়া নামের আড়াই বছরের এক কন্যা সন্তান আছে এবং তারিন এখন ৭ মাসের সন্তানসম্ভবা। স্বামীকে সন্ত্রাসীরা জবাই করে হত্যা করেছে এ খবর শোনার পর থেকেই হুঁশ হারিয়েছেন তারিন। তার ভবিষ্যৎ কী হবে, তার সন্তানদের কী হবে এসব ভেবে তারিনের চোখে এখন ঘোর অমানিশা।

তিনি আরও বলেন, খুনিরা আমার বোনের জামাইকে অনাগত সন্তানের মুখ দেখতে দেয়নি, নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। অবিলম্বে খুনিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে তুখোড় মেধাবী ছিলেন সাইফুল। জিপিএ ফাইভ পেয়ে দাখিল পাশ করেছিলেন আধুনগর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে। সাইফুল শুধু মেধাবী ছিল না অত্যন্ত অনুগত ছাত্র ছিলেন। তাকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করবেন বলেই হয়ত বহু গুণে গুণান্বিত ছিল সে। মাদ্রাসার সব শিক্ষকের কাছে প্রিয় ছাত্র ছিলেন সাইফুল।

নিহত সাইফুলের বন্ধু মোহাম্মদ আরমান বলেন, বন্ধু আমার মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে ইন্টারমিডিয়েট পড়ে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। সেখান থেকে লেখাপড়া শেষ করে। পরে আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) থেকে এলএলবি পাশ করে আইন পেশায় নিযুক্ত হয়। অন্যান্য বন্ধুদের চেয়ে সাইফুল ছিল আলাদা। তার সামনে কোনো অন্যায়ে সে চুপ থাকতো না, তার প্রতিবাদ করতো। নিয়মিত নামাজ আদায় করতো এবং খুবই মিশুক ছিল। ঘটে যাওয়া এ ঘটনা এখনো মানতে পারছি না।

নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের পিতা জামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, আমার ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সাইফুল ছিল ৩য় সন্তান। আমার ছেলে নামাজি, নম্র ও ভদ্র প্রকৃতির মানুষ ছিল। তাহাজ্জুদ নামাজও বাদ যেত না তার।

তিনি বলেন, আমার ছেলে এভাবে আমার আগে চলে যাবে আমি কখনো কল্পনা করিনি। বিনা অপরাধে যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের জানাজার নামাজ চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে বুধবার বেলা ১১টায় এবং গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতিতে বাদ জোহর দ্বিতীয় দফা নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত