[ad_1]
পপি ও ইসমতের রোগের বর্ণনা শুনে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা নাদিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জন্মগত অটিস্টিক সন্তান। অটিজমে আক্রান্তদের বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন। তাঁদের চিকিৎসায় তেমন উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
তাহেরা বেগমের সংসারে এক ছেলে তিন মেয়ে। বড় ছেলে মিরাজ (২২) সাগরে মাছ ধরে সংসার চালান। গত কয়েক মাস সাগরে মাছ ধরা পড়ছে না, আয়রোজগার নেই বললে চলে। ছোট মেয়ে তাসমিনা আক্তার (১০) পড়ছে বাড়ির পাশের নাজির কবির ইসলামিয়া একাডেমির পঞ্চম শ্রেণিতে। সেও মাঝেমধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ করে। স্বামী ইউসুফ আলী (৫৫) হাঁপানির রোগী। কয়েক বছর ধরে বেকার। আগে তিনি লবণের মাঠে শ্রমিকের কাজ করতেন।
সকাল থেকে পপি ও ইসমতকে শিকলবন্দী করে রাখা হয়। ঘরের পাশ দিয়ে হাঁটাচলার একটি কাঁচা রাস্তা আছে। হেঁটে যাওয়া লোকজন দেখলে পপি চিৎকার করেন। তবে ইসমত একেবারে চুপচাপ, মাথা নিচু করে বসে থাকে। সন্ধ্যার আগেভাগে দুই মেয়েকে ঘরের ভেতরের একটি কক্ষে বন্দী করে রাখেন মা। সেখানেই কাটে তাঁদের রাত। শীত অথবা ঠান্ডা বাতাস ঠেকানোর মতো গরম জামাও দুজনের নেই।
বড় মেয়ের জন্মের পর থেকে টানা ২০ বছর এমন লড়াই করে যাচ্ছেন তাহেরা বেগম। তিনি বলেন, ‘এমন কষ্ট আল্লাহ যেন অন্য কাউকে না দেন। দুই মেয়েকে সামলাতে আমাকে হিমশিম খেতে হয়। মাঝেমধ্যে পায়ের শিকল খুলে পপি ও ইসমত এদিক–সেদিক পালিয়ে যায়। পরে তাদের খুঁজে এনে আবার শিকল পরিয়ে দিই। রাতেও দুজনের পায়ে শিকল বাঁধা থাকে। রাতবিরাতে ঘুম থেকে উঠে দুই বোন চিল্লাচিল্লি করে। তখন আমার ঘুমও ভেঙে যায়। শীত ও বর্ষাকালে দুই মেয়েকে নিয়ে কষ্টের সীমা ছাড়িয়ে যায়। পপি-ইসমতের ভাগ্য আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। যত দিন শরীরে প্রাণ থাকবে, তাদের ছেড়ে যাব না।’
[ad_2]
Source link