[ad_1]
সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রচার করা হয়েছে, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির উপযোগী দেশের প্রায় শতভাগ শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তির লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। তবে বাস্তবতা এই কথা বলে না। তা ছাড়া সরকারি হিসাবেই ভর্তি হওয়া শিশুদের ২০ ভাগের বেশি প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই বিদ্যালয় ত্যাগ করে। এর প্রধান কারণ দারিদ্র্য। অর্থকষ্টে থাকা অভিভাবকেরা মনে করেন, পড়াশোনা করে আদৌ কিছু হয় না। অথচ একসময় ‘পড়াশোনা করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে’—এ রকম একটি কথা তাঁদের বিশ্বাসে ছিল। দরিদ্র পরিবারগুলো কষ্ট করে হলেও সন্তানের লেখাপড়া নিশ্চিত করার চেষ্টা করত। এখন তারাও বুঝতে পারে, উচ্চশিক্ষার ফলাফল ‘বেকারত্ব’।
দারিদ্র্যকে বিবেচনায় নিয়ে শিশুর শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সরকার যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তার মধ্যে উপবৃত্তি একটি। সরকারি হিসাবে, প্রাথমিক স্তরে উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি। এর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিকের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মাসে ৭৫ টাকা এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া শিক্ষার্থীকে মাসে ১৫০ টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হয়। এরপরও শিক্ষার্থী কেন ঝরে পড়ে, সেটি না বোঝার কোনো কারণ নেই। এই টাকা শিক্ষার্থীকে কোনো ধরনের আর্থিক সুরক্ষা দিতে পারে না। বিন্যা মূল্যে শিক্ষার্থীকে পাঠ্যবই দেওয়া হচ্ছে বটে, কিন্তু একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা খরচ মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর পক্ষে তা সামাল দেওয়া অসম্ভবপ্রায়।
‘স্কুল ফিডিং’ কার্যক্রমের আওতায় দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার ৯৩টি উপজেলার ১৫ হাজার ৭০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে ৭৫ গ্রাম ওজনের বিস্কুট সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ক্ষুধার ‘গভীর কূপে’ এটি এক টুকরো পাথরের বেশি নয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যকে তাদের স্বাভাবিক নিয়তি বলেই মেনে নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়ও ঠিক পরিষ্কার নয়।
বিভিন্ন এনজিও এবং বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ভূমিকা প্রায় ক্ষেত্রেই নিরীক্ষামূলক। সব দরিদ্র শিশুর জন্য সেসব পরিকল্পনা হয় না কিংবা সব শিশুর জন্য তা সুফলও বয়ে আনে না। সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের ভূমিকা দেখে স্রেফ হতাশ হতে হয়। ‘উন্নয়নে’র ফিরিস্তি তৈরি ও তার প্রচারণার জন্য সরকার নানা সময়ে চটকদার কিছু উদ্যোগ নেয়। বাস্তবে দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা নিয়মিত ও নিশ্চিত করার জন্য এসব উদ্যোগ বিশেষ প্রভাব ফেলে না।
[ad_2]
Source link