Homeদেশের গণমাধ্যমেশেখ হাসিনা প্রশ্নে কার প্রতিধ্বনি ওয়েইসির কণ্ঠে

শেখ হাসিনা প্রশ্নে কার প্রতিধ্বনি ওয়েইসির কণ্ঠে


শেখ হাসিনা ইস্যুতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেভাবে ভারতের সমালোচনা করছে, অবিকল সেই ভাষাতেই এবার তাতে সুর মেলালেন ভারতেরই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি!

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীর মতো বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতারা বিগত বহু বছর ধরে ভারত সম্পর্কে যে অভিযোগটা করে আসছেন, হুবহু তারই প্রতিধ্বনি এখন শোনা যাচ্ছে ভারতের অন্যতম সেরা পার্লামেন্টারিয়ান ওয়েইসির কণ্ঠে!

বাংলাদেশের অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন ভারতের মাটিতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন, আর কেনই বা ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছে, সরাসরি সে প্রশ্নই তুললেন ভারতের এআইএমআইএম দলের প্রধান তথা হায়দ্রাবাদের টানা পাঁচবারের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।

সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেল ‘আজ তকে’র একটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ওয়েইসি আরও বলেন, ‘ভারতে আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। আমি জানতে চাই, নরেন্দ্র মোদি সরকার কি শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য সমর্থন করে?’

ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে একটা রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত ছিল– তা না করে ‘বিশেষ একটা পরিবারের সঙ্গে’ সম্পর্ক গড়ে তোলা কখনোই সমীচীন হয়নি!’’

আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মন্তব্য এ জন্যই আরও গুরুত্বপূর্ণ যে শেখ হাসিনাকে আতিথেয়তা দেওয়ার প্রশ্নে ভারতে একটা জোরালো ‘রাজনৈতিক ঐকমত্য’ আছে বলে এতদিন যা ধারণা করা হচ্ছিল, সেটাকে এখন তা ভুল প্রমাণ করলো।

বস্তুত, গত ৬ আগস্ট (শেখ হাসিনা ভারতে এসে নামার ঠিক পর দিন) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিভিন্ন দলের এমপিদের নিয়ে যে সর্বদলীয় বৈঠক করেছিলেন, তাতে কিন্তু কোনও দলই শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিরোধিতা করেনি। বরং ভারতের একজন পুরনো ও বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে তাকে যতদিন দরকার, ততদিন নিরাপদে এ দেশে রেখে দেওয়া উচিত– সব দলই এ বিষয়টায় সহমত হয়েছিল।

কিন্তু ওয়েইসির কথা থেকে এখন এটা পরিষ্কার—ভারতে শেখ হাসিনার উপস্থিতি ও তার কর্মকাণ্ড কারও কারও জন্য অস্বস্তি বা ধৈর্যচ্যুতির কারণ হয়ে উঠছে।

বস্তুত, শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ভারতের পার্লামেন্টেও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে সরব হয়েছিলেন ওয়েইসি।

তিনি সেদিন সভায় বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মোদি সরকারের উচিত বিষয়টি নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের সঙ্গে কথা বলা।’

‘তবে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকে হাতিয়ার করে ভারতেও সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে’ বলে অভিযোগও জানান তিনি।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, আসাদউদ্দিন ওয়েইসি কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই মোদি সরকারের বাংলাদেশ নীতির কঠোর সমালোচনা করে আসছেন– তিনি যে আজ আচমকা নতুন কিছু বলছেন তা মোটেই নয়!

এমনকি, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও তিনি একাধিক জনসভায় ও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন না করে শুধু হাসিনা-হাসিনা করার খেসারতই এখন ভারতকে দিতে হচ্ছে!’

ওয়েইসির যুক্তি ছিল, ‘আজ ভারতে যারা হাহুতাশ করছেন যে বাংলাদেশ ইসলামপন্থিদের কব্জায় চলে গেলো, কিংবা পাকিস্তানের ঘাঁটিতে পরিণত হলো– তাদের এটা বোঝা উচিত যে নরেন্দ্র মোদি সরকার বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কটাকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু একজন ব্যক্তি বা পরিবারেই আস্থা রেখেছিলেন এবং তার জন্যই এখন ভারতকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।’

নরেন্দ্র মোদির ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক’ কূটনীতিকেই এ জন্য দোষারোপ করেছিলেন তিনি।

নেপাল, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো অন্যান্য প্রতিবেশী দেশেও ভারত যে প্রায় একই ধরনের ভুল করেছে, সেটাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত