Homeদেশের গণমাধ্যমেবেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন

বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন

[ad_1]

খুলনা: ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে শিবসা নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

খুলনা জেলার পাইকগাছার দিলুটি এলাকার বাসিন্দা মিন্টু সর্দার বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে বাংলানিউজকে এ আশঙ্কার কথা জানান।

তিনি বলেন, আমাদের রাস্তা ও বেড়িবাঁধগুলো এমনিতেই নিচু ও নড়বড়ে। তার উপর পানির উচ্চতা বাড়লে আমাদের আর উপায় থাকবে না। ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভাঙন আতঙ্কে আমাদের রাত কাটছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার লস্কর, দেলুটি, লতা, গড়ইখালী, রাড়ুলী, গদাইপুর ও সোলাদানাসহ ৭ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ যে কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই আতঙ্ক বেড়ে যায় এখানকার বাসিন্দাদের।

উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া গ্রামের মনিরুজ্জামান মনি বলেন, মসজিদের পাশে বেড়িবাঁধ রাতে ধসে গেছে। জরুরিভিত্তিতে বাঁধ রক্ষা না করতে পারলে চলতি রোপা-আমন মৌসুমের ধানসহ শত শত বিঘা জমির মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যাবে।

ভাঙনের ভয়াবহতা দেখেই তিনি গ্রামের লোকদের জানানোর পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনসহ পাউবোর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

রিমাল আঘাতের পাঁচ মাস না যেতেই ফের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা।  
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটার কয়েক লাখ মানুষ রয়েছেন নির্ঘুম। তাদের আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড় দানা আঘাত হানলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও এলাকা প্লাবিত হবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদ-নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভেঙে যেতে পারে দুর্বল বেড়িবাঁধ।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে খুলনার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের দশহালিয়া গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধের ১৩-১৪/২ নম্বর পোল্ডারের পুরানো মসজিদের সামনের  বেড়িবাঁধের ১৫০ মিটার অংশ নদে ধসে পড়ে। ভাঙনে হুমকিতে পড়েছে বাঁধসংলগ্ন গ্রামসহ প্রায় ৫ হাজার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এখনও মেরামত করা হয়নি। জোয়ারের পানির চাপে বাঁধ আরও দুর্বল হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও  সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়রা উপজেলার দশহালিয়া, শিকারিবাড়ি, হোগলা, কালীবাড়ি, গুরিয়াবাড়ি, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর কয়রা, মঠবাড়ি এবং কাটমারচর এলাকার প্রায় ৭ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পাইকগাছা উপজেলার জামাইপাড়া, বাসাখালী, হারিখালী, বাইনতলা খেয়াঘাট, পশ্চিম কানাইমুখী, ননিয়াপাড়া, পাইশমারী, কুড়ুলিয়া, সেলেমানপুর, পুরাইকাটি এলাকার ৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দাকোপ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া, বানিশান্তা, নিশানখালী, আন্ধারমানিক, আড়াখালী, কালিবাড়ী, খলিসা, মৌখালী, রায়বাড়ি, তাঁতখালী ও তিলডাঙ্গা এলাকায় ৪ দশমিক ২৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে।

বটিয়াঘাটা উপজেলার বারোভূঁইয়া, কড়িয়া, কড়িয়া জব্বারখালী, ঠাকুরানবাড়ি, বুজবুনিয়া, দ্বীপ বরণপাড়া, কল্যাণশ্রীপুর, বটিয়াঘাটা বাজার এলাকার ৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অবস্থাও জরাজীর্ণ।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র আগে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত সম্ভব না হলেও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি স্থানে সংস্কার করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত করা হয়েছে। কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটার প্রায় ২৩ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতের জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, এবারের ঘূর্ণিঝড় খুলনাঞ্চলে আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই। ঝড় যাচ্ছে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিক দিয়ে। যার কারণে খুলনায় ঝড় নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। শুধু দমকা বাতাস ও বৃষ্টি হবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জন্য ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন আশ্রয় নিতে পারেন। এসব শেল্টারে ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন আশ্রয় নিতে পারবে। এ ছাড়া তিনটি মুজিবকিল্লায় ৪৩০ মানুষ আশ্রয় ও ৫৬০টি গবাদি পশু রাখা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২৪
এমআরএম/এসএএইচ



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত