[ad_1]
পাকিস্তান এয়ারফোর্সের ডাক্তার সানজিদা আর পাকিস্তান অবজারভার-এর সাংবাদিক মফিজের একান্ত আটপৌরে দাম্পত্য জীবনের ঘরোয়া কথাবার্তা দিয়ে উপন্যাসটির সূচনা। পাকিস্তান এয়ারফোর্সে চাকরি পেয়ে বংশালের বাসা থেকে গ্রিনরোডের বাসায় এসে হয়তো ক্ষণিক সুখের সন্ধান পেয়েছে তারা, কিন্তু তবু কোথায় যেন অস্বস্তি রয়েই যায়। সেই অস্বস্তির কারণ খুঁজলে দেখা যাবে, পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকেই যে বৈষম্য ছিল, তার রূপ কতটা প্রকট! সানজিদা পশ্চিম পাকিস্তানে ট্রেনিং করতে গিয়ে আবিষ্কার করে, সেখানকার রাস্তাঘাট আপেল দিয়ে সয়লাব; অথচ একই রাষ্ট্রের অপরাংশে সেটা রীতিমতো দুর্লভ। অন্যান্য কোর্সমেট যেখানে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হয়ে রীতিমতো তুবড়ি ছোটাচ্ছে, সেখানে স্রেফ বাঙালি হওয়ার কারণে প্রমোশন দেওয়া হয়নি মেজর আকরামকে। সামরিক বাহিনী, জনপ্রশাসন, ব্যবসা-বাণিজ্য—প্রতিটি ক্ষেত্রে এ রকম বৈষম্যের শিকার পূর্ব বাংলার মানুষেরা। প্রসঙ্গত বলা যায়, স্বাধীনতার অব্যবহিত পর পূর্ব পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় পশ্চিম পাকিস্তানের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম ছিল; কিন্তু ১৯৬৯ সালে এই ব্যবধান দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। এখানেই শেষ নয়, বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তার ৭০ শতাংশ, কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ব্যয়ের ৮০ শতাংশ এবং সামরিক ব্যয়ের ৯০ শতাংশ পেত পশ্চিম পাকিস্তান। এই অর্থনৈতিক পীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধেই ছয় দফা উত্থাপিত হয়, যেখানে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্বার্থ প্রাধান্য পেয়েছিল। সানজিদা আর মফিজের দৈনন্দিন ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি যেমন এসেছে, তেমনি পাওয়া যাবে সে সময়ের মানুষের জীবনচিত্র।
[ad_2]
Source link