Homeদেশের গণমাধ্যমেখুবই জনপ্রিয় ছিলেন ফায়ার ফাইটার নয়ন, কাঁদছে স্বজন-এলাকাবাসী

খুবই জনপ্রিয় ছিলেন ফায়ার ফাইটার নয়ন, কাঁদছে স্বজন-এলাকাবাসী

[ad_1]

ঢাকার সচিবালয়ে ভয়াবহ আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী শাহানুজ্জামান নয়ন। এ ঘটনা জানাজানি হলে নিহতের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান আটপুনিয়া গ্রামে চলছে শোকের মাতম। মা নারগিস বেগম সন্তানের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। স্বজন ও এলাকাবাসীর বুকফাটা আর্তনাদে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো আটপুনিয়া গ্রাম যেন শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নয়নের বাবা আখতারুজ্জামান নির্বাক হয়ে আছেন। সন্তানের নিহত হওয়ার খবর মোবাইল ফোনে পাওয়ার পর থেকে তিনি স্তব্ধ। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না।

বড় বোন সীমা আখতার জানান, নয়নের চাকরির বয়স মাত্র দুই বছর। মূল কর্মস্থল ছিল সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অফিসে। ডেপুটেশনে কর্মরত ছিল ঢাকার তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে। সেখানে ২১ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ টিমের সঙ্গে কাজ করছে। বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবর পেয়ে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে নয়নও ঘটনাস্থলে যায়।

তিনি বলেন, দায়িত্বপালনকালে একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়, এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। খবরটি ভোর ৫টার দিকে আমার বাবার মোবাইল ফোনে ঢাকা থেকে জানানো হয়। সে সময় থেকেই আমরা পরিবারের সবাই তার অবস্থা জানার জন্য বার বার যোগাযোগ করছিলাম। ভোর ৬টার পর জানতে পারি, আমার ছোট ভাই নয়ন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ কথা বলে তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন, এক পর্যায়ে মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে আহাজারি করেন।

নিহত ফায়ার ফাইটার নয়নের ভাতিজা শাফিউল ইসলাম শিমুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসতর্কতার জন্যই চাচাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তিনি ওই ট্রাকের চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম জানান, নয়ন পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী ছিল। তার বেতনের টাকায় তাদের সংসার চলতো। জমিজমা বিক্রি করে চাকরি নিয়েছিল- তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেলো।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে পাওনাদারের টাকা পরিশোধ করতে অগ্রণী ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পাওনাদারের  টাকা পরিশোধ করেছে- এখন ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ কীভাবে শোধ করবে, সংসারে কীভাবে চলবে? প্রশ্ন রেখে তিনি কাঁদতে থাকেন। বড় বোন সীমা আবারও স্বামী সাইফুলের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

নিহতের মা নারগিস বেগম বলেন, নয়ন ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়েছিল এখনও রেজাল্ট হয়নি। বলতো, মা আমি ডিগ্রি পাস করলে আমার পদোন্নতি হবে, তখন সংসারে অভাব থাকবে না। কিন্তু আল্লাহর কি লীলা খেলা, পরীক্ষার রেজাল্টও জানতে পারলো না। যে ট্রাকচালক তাকে সন্তানহারা করেছে তার কঠিন এবং কঠোর বিচার দাবি করেন তিনি।

বাবা আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেলো। ছেলের বদলে আমার মৃত্যু কেন হলো না। বাবা হিসেবে সন্তানের লাশ বহন করা কী কষ্টের তা কাউকেই বোঝানো যাবে না। তিনি সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন।

স্থানীয় সাহেব আলী, মোকলেসুর রহমান বলেন, নয়ন এলাকায় খুব জনপ্রিয় ছিল নয়ন। তার মৃত্যু আমাদের গ্রামে যে শোকের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত