[ad_1]
কম ভ্যাটের অন্তত ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ আরোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসব খাতে বর্তমানে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট নেওয়া হয়। মূল্যস্ফীতির এ সময়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানোর ফলে সাধারণ ভোক্তার ওপর নতুন করে ব্যয়ের চাপ তৈরি হতে পারে। এনবিআর জানিয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাকি ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পোশাকের ওপর ভ্যাটের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে এনবিআর। বর্তমানে সাধারণমানের এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) রেস্তোরাঁয় খাওয়ার জন্য ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এটি বেড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে। এছাড়া, নন-এসি হোটেলের ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর স্থানীয় ব্র্যান্ডের পোশাকের ওপর বর্তমানে ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে।
এটিও দ্বিগুণ হতে পারে। শুধু ব্র্যান্ডেড নয়, সাধারণমানের যে কোনো পোশাক কিনলেই ক্রেতাদের এ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হতে পারে। মেডিসিন ব্যবসায়ও ভ্যাট বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কেনার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ট্রেড ভ্যাট কার্যকর আছে, সেটি ৭.৫ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাবান, ডিটারজেন্ট, পেইন্ট, সুপারি ও আরও ৭টি পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আসতে পারে এনবিআরের কাছ থেকে।
এর বাইরে বিমানের টিকিটের ক্ষেত্রে এক্সাইজ ডিউটি এবং তামাক পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যালু বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে রাজস্ব বোর্ডের। এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন লক্ষ্য পূরণে বছরের মাঝামাঝি এসে এভাবে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে আগামী শনিবার (৪ জানুয়ারি) অধ্যাদেশ জারি করে কার্যকর করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের আরেক কর্মকর্তা। আগামী অর্থবছর থেকেই প্রায় সব পণ্য ও সেবার ওপর একক ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কার্যকর করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
এর আগে ২০১২ সালে আইএমএফকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে পাস করা একটি আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতেও তা করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এনবিআর-এর ভ্যাট নীতির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, চলতি মাস থেকেই আমরা ১৫ শতাংশ ইউনিফায়েড রেটের পরিকল্পনা করছি।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বিক্রি ৫০ লাখ টাকার বেশি হলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ॥ কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৈনিক বিক্রি গড়ে ১৩ হাজার ৬৯৮ টাকা পার হলেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ শতাংশ ভ্যাটের আওতায় চলে আসতে পারে। বিদ্যমান নিয়মে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বিক্রি ৫০ লাখ থেকে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত হলে তার জন্য ৪ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল। তবে টার্নওভার ৫০ লাখ টাকা ছাড়ালেই এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের আওতায় নিয়ে আসছে এনবিআর।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে বিপুল সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বেড়ে যাবে। হিসাব অনুযায়ী, কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৈনিক বিক্রি গড়ে ১৩ হাজার ৬৯৮ টাকা পার হলেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ শতাংশ ভ্যাটের আওতায় চলে আসতে পারে।
বর্তমানে বার্ষিক টার্নওভার ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট দিতে হয় না। এছাড়া তাদের ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন বা বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) নিতেও বাধ্য করা হয়নি। তবে, নতুন নিয়মে বছরে ৩০ লাখ টাকার বেশি টার্নওভার হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে বিআইএন নিতে হবে। এনবিআর-এর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন লক্ষ্য পূরণে বছরের মাঝামাঝি এসে এভাবে ভ্যাট হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৩ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে তৈরি পোশাক (আরএমজি) থেকে প্রথমার্ধে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশের বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে উৎপাদন কিছুটা বিঘিœত হলেও তৈরি পোশাক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।
[ad_2]
Source link