Homeদেশের গণমাধ্যমেআ.লীগ নেতার যোগসাজশে পাহাড় কেটে সাবাড় করলেন বিএনপি নেতা

আ.লীগ নেতার যোগসাজশে পাহাড় কেটে সাবাড় করলেন বিএনপি নেতা

[ad_1]

রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বটতলী এলাকা। বরইছড়ি-ঘাগড়া আঞ্চলিক (রাঙ্গামাটি-বান্দরবান) সড়কের পশ্চিম পাশ ঘেঁষেই রয়েছে কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ধনা তঞ্চঙ্গ্যা ও তার ভাই সমীরণ তঞ্চঙ্গ্যার ‘মালিকানাধীন’ পাহাড়।

বিগত কয়েকমাস ধরেই সড়কের পাশ থেকেই চলছে পাহাড় কাটা। পাহাড়জুড়ে স্কেভেটর দিয়ে মাটিকাটার চিহ্ন।

এরইমধ্যেই প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার পাহাড় ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে কেটে সাফ করে ফেলা হয়েছে। সড়কের পাশ ঘেঁষেই পাহাড় কাটা চললেও স্থানীয় প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্টরা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ধনা তঞ্চঙ্গ্যার কাছ থেকে পাহাড়ের মাটি কিনে পাহাড়টি কাটছেন কাপ্তাই উপজেলার লাগোয়া রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অর্জুন মনি চাকমা। বিগত ২-৩ মাস ধরে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান আঞ্চলিক পাশ ঘেঁষেই আওয়ামী লীগ-বিএনপির এই দুই নেতার মিলেমিশে পাহাড় কাটা চলছে। পাহাড় কেটে এসব মাটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা অর্জুন মনি চাকমার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, পাহাড়জুড়ে স্কেভেটর দিয়ে মাটিকাটার চিহ্ন। সড়কের পাশ থেকে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে পাহাড় কাটার কারণে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। প্রধান সড়কের পাশ থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মিটার সড়কের মতো করে পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বটতলী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা ধনা তঞ্চঙ্গ্যা ও তার ভাই স্কুল শিক্ষক সমীরণ তঞ্চঙ্গ্যার ‘মালিকানাধীন’ পাহাড়ের মাটি কেটে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রয় করছেন কাউখালীর বিএনপি নেতা অর্জুন মনি চাকমা। এমনকি পাহাড় কাটার কাজটি করা হচ্ছিল বেশির ভাগই সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত। পাহাড় কাটা চক্রে বিএনপির নেতা অর্জুন মনি চাকমার সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা স্থানীয়দের।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ৬ (খ) অনুযায়ী পরিবেশ সুরক্ষায় পাহাড় কাটায় স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই আইনে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কাটা যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদিও জাতীয় স্বার্থে পাহাড় বা টিলার কাটার প্রয়োজনীয়তা হলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে কাটা যেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বটতলী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাহাড় কাটার ফলে মাটি ধসে সড়কে পড়ে হতাহতের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। পাহাড় কাটার জন্য পাহাড়ের ওপর লাগানো বৃক্ষগুলো আগেই কেটে ফেলা হয়। কাপ্তাই উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে সড়কের পাশেই এমন ধ্বংসযজ্ঞ চললেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। গত বছরের নভেম্বর থেকেই প্রায় প্রতিরাত কাটা হচ্ছিল পাহাড়।

পাহাড়ের মালিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ধনা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, এটা পাহাড় কেটে রাস্তা করা হয়েছে, পাহাড়ের ওই পাড়ে একটি পাড়া রয়েছে। ওই পাড়ার মানুষজন আমাকে অনুরোধ করেছেন যে যদি পাহাড় কেটে রাস্তার মতো করা হয় তাহলে তাদের জন্য চলাচলের সুবিধা হয়। পরে আমি বলেছি সুবিধা হলে মাটি কেটে নিতে।

তিনি বলেন, ‘মূলত এনডিই নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে মাটি ব্যবসায়ীরা পাহাড় কেটে মাটি দিচ্ছেন। মাটিকাটার অনুমতি প্রসঙ্গে আমি কিছুই জানি না, সেগুলো যারা কেটেছে তারা জানবে। প্রশাসনিক ও অনুমতি সংক্রান্ত বিষয়গুলো যারা মাটি কাটছে (অর্জুন মনি চাকমা) তারাই দেখবে।’

পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অর্জুন মনি চাকমা কালবেলাকে জানান, ‘আমরা দুই-তিন টাকা কামাচ্ছি আবার আপনি (এই প্রতিবেদক) কেন ফোন দিয়েছেন। আপনি কেমনে খবর পেয়েছেন? একপর্যায়ে তিনি পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এটি পাহাড় নয় ইউনিয়নের রাস্তা। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কমিটমেন্ট দেওয়া আছে। ওপরে ৭০ থেকে ৮০ পরিবার আছে তাদের সুবিধার জন্য করেছে।’

এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে রাস্তা করতে হলে তো পাহাড় কাটতেই হবে।’

একপর্যায়ে পাহাড় কাটার বিষয়ে রাঙামাটি ডিসি বা কাপ্তাই ইউএনও কারও অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ইউএনও এটি কাটার অনুমতি দেওয়ার কে? যারা কাটায় সহযোগিতা করেছে তারা বিএনপির দলীয় মানুষ, তাই কিছু আয় রোজগার করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, ওয়াগ্গা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান চিরঞ্জিত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘পাহাড় কাটার খবর পেয়েছি। মনি চাকমা নামে একজনের নাম শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়েছি। পরে বিষয়টি নিয়ে আর খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।’

পাহাড় কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জিসান বিন মাজেদ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

আর পরিবেশ অধিদপ্তর রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. মুমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা পাহাড় কাটার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি এবং এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত