[ad_1]
বাংলাদেশের অত্যন্ত সম্ভাবনাপূর্ণ শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালুর আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের শ্রমিক ও কর্মীদের সুবিধার্থে এটি চালু করা হলে তারা একবার ভিসা নিয়ে একাধিকবার যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। এর ফলে, বিশেষ করে শ্রমজীবীরা পরিবার-পরিজন এবং স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও প্রয়োজন অনুযায়ী দেশে ফিরতে পারবেন। এর পাশাপাশি ইতোপূর্বে মালয়েশিয়ায় নির্ধারিত সময়ে যেতে না পারা ১৮ হাজার শ্রমিককে সে দেশে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওসমান গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। প্রত্যুত্তরে হাইকমিশনার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গঠিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই কমিটি এ বিষয়ে একটি সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করা যায়।
কিছুদিন আগে মালয়েশিয়া থেকে সুসংবাদ এসেছে বাংলাদেশী শ্রমজীবীদের জন্য। দেশটির প্লান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসব কর্মীর কাজ হবে মূলত মালয়েশিয়ার সুবিস্তৃত সুবিশাল পাম গাছের (যা থেকে আহরিত হয় পাম তেল) ও রাবার বাগানে কাজ করা। মোটা দাগে বলা যায় কৃষি শ্রমিক। এ বিষয়ে বাংলাদেশী শ্রমজীবীদের সবিশেষ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। কাজেই আশা করা যায়, যথেষ্ট সংখ্যক কর্মীর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বাংলাদেশের পক্ষে। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্লান্টেশন সেক্টরে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গত বছর ২৬ অক্টোবর এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশী আগ্রহী শ্রমজীবীদের স্বার্থে কতিপয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কর্মী পাঠানোর জন্য মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে চাহিদাপত্র সত্যায়নের শেষ তারিখ ২০২৫-এর জানুয়ারি পর্যন্ত। নির্দেশনা মোতাবেক রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার বেশি নিতে পারবে না। তদুপরি সব লেনদেন উপযুক্ত লিখিত দলিল, রসিদ বা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কর্মীদের লেনদেন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তদুপরি রিক্রুটিং এজেন্ট নির্ধারিত তারিখের আগে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ভিসা, বিএমইটি, বর্হিগমন ছাড়পত্র, বিমান টিকিট, প্রাক-বহির্গমন, ওরিয়েন্টেশনসহ সব প্রস্তুতি নিশ্চিত করবে। যথাসময়ে চাকরির শর্ত, বেতন ভাতা, অন্যান্য সুবিধা, চাকরির পরিবেশসহ সব বিষয়ে কর্মীদের সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে। এসব বিষয়ে নিয়মিত সরকারি পর্যায়ে মনিটরিং করা হলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হতে পারে। অতীতের মতো দালালদের উপদ্রব, উৎকোচ, ঘুষ-দুর্নীতি, হয়রানি, অনিয়ম-অব্যবস্থা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এর পাশাপাশি মাল্টিপল ভিসার সুবিধা দেওয়া হবে বলেই প্রত্যাশা।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এক সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসেন। সেদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত একান্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে। ড. ইউনূস সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পুরনো বন্ধু হিসেবে স্বাগত জানান। তাঁরা পরস্পর চার দশকের বেশি সময় ধরে একে অপরকে চেনেন। পরে রাজধানীর একটি স্থানীয় হোটেলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা। এতে সমধিক গুরুত্ব পেয়েছে সে দেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রপ্তানির বিষয়টি। উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, তাঁর সরকার সব শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ইতোপূর্বে যেতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিককে সে দেশে যাওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে বলেই প্রত্যাশা।
[ad_2]
Source link