[ad_1]
আরও খোলাসা করে বলা যায়, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে কোথাও কি বিপ্লবের পরিবেশ ও প্রস্তুতি ছিল? পরিবেশ ও পরিস্থিতি ছিল না বলেই আমরা বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারিনি। সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এবং সরকারকে সংবিধানের আওতায় শপথ গ্রহণ করতে হয়েছে। এতকাল পরে তা নিয়ে ওভাবে কথা বললে সমাজে নতুন বিতর্ক জন্ম নিতে পারে, সাংবিধানিক সংকটের প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে অভ্যুত্থানকে বিপ্লবের মর্যাদাদানের ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হলে তাঁর অভিমত আলোর মুখ দেখতেও পারে এবং সে মোতাবেক গঠনের কাজটি সম্ভব হতেও পারে। তবে আমার ধারণা, তা হয়তো সহজসাধ্য হবে না। সে কারণেই এইক্ষণে গঠনের লক্ষ্যে তাঁর জনগণের নিজের কর্তা হয়ে ওঠার এবং সংবিধান প্রণয়নের ভাবনা—আমার মনে হয় ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার স্বপ্ন। আর সেটা হয়তো দুঃস্বপ্ন বা দিবাস্বপ্ন।
তিনি ওই নিবন্ধে আরও লিখেছেন, ‘এমন একটি সরকার কায়েম করা হয়েছে, যা সংবিধানে নেই এবং ওই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে সেটা বদলানো বা তথাকথিত সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, যা এক স্ববিরোধিতা।’ ধারণা হয়, তাঁর তেমন অভিমতও স্ববিরোধিতাপূর্ণ। তিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করছেন, তার পতনের লক্ষ্যে গণ-অভ্যুত্থানকে সমর্থন করছেন। আবার গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী সরকার সংবিধানসম্মত নয় মর্মে প্রশ্ন তুলেছেন, তা কি স্ববিরোধী হয় না? গণ-অভ্যুত্থানের পর সরকার কীভাবে গঠিত হবে, তা তো সংবিধানে লেখা থাকে না। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোসহ জনগণের ঐকমত্যই মুখ্য। অভ্যুত্থানের এতকাল পরে তাঁর ওই অভিমত কি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের অনুভূতিকে আহত করে না?
যাহোক, রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি হতে পারে আমাদের জাতীয় জীবনের অগ্রগতির সিঁড়ি, সে পথে আমরা চলতে শুরু করলে সময়ের অগ্রগতিতে আমরা একসময় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। একজন লেখক ও দার্শনিকের মতামত সব সময় সময়োপযোগী হবে বা সর্বজনের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে—এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষ তাঁর ওই রূপ অভিমতে যে দ্বিধান্বিত হতে পারে, তা মনে হয় সুনিশ্চিত। তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলি ও পাণ্ডিত্য অসামান্য। আমাকে ভাববার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।
[ad_2]
Source link