Homeদেশের গণমাধ্যমেশিবিরের দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ বহুগুণ বেড়েছে: ডা. তাহের

শিবিরের দায়িত্ব ও চ্যালেঞ্জ বহুগুণ বেড়েছে: ডা. তাহের

[ad_1]

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, জনগণ শিবিরের কার্যক্রমকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছে, যা শিবিরের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। তবে এই সুযোগের সঙ্গে সঙ্গে শিবিরের দায়িত্ব এবং চ্যালেঞ্জও বহুগুণ বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর মগবাজারস্থ আল ফালাহ মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৫ এর প্রথম সাধারণ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. তাহের বলেন, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবির জনগণের মাঝে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা ও স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং শিবিরের নেতৃত্বকে আরও দূরদর্শী হতে হবে এবং যুগের পরিবর্তন অনুযায়ী কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

এই নেতৃত্বই শিবিরকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পথ দেখাবে এবং জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দামের সঞ্চালনায় ও কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৫ এর দুই দিনব্যাপী প্রথম সাধারণ অধিবেশনটি দারসুল কুরআনের মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হয়। দারসুল কুরআন পেশ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।

অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের শহীদ সামিউ আমান নূরের বাবা মো. আমান। দুই দিনব্যাপী অধিবেশনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এবং প্রথম দিনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

অধিবেশনে ২০২৫ সেশনের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান।

অনুষ্ঠানে দেশ ও ইসলামী আন্দোলনের জন্য ২০২৫ সাল টার্নিং পয়েন্ট উল্লেখ করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২০২৫ সাল আমাদের জন্য এক ঐতিহাসিক ও চ্যালেঞ্জের বছর। এই বছরটি কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং ইসলামী আন্দোলনের জন্যও একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা আজ ইসলামী আন্দোলনের প্রতি নিবদ্ধ। যদি আমরা সঠিক তৎপরতা, সুসংগঠিত পরিকল্পনা এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যেতে পারি, তবে আসন্ন নির্বাচনে আশানুরূপ ফলাফল অর্জন সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সাংবিধানিক অধিকার এক সময় ফ্যাসিস্ট সরকার কেড়ে নিয়েছিল। কিন্তু আমরা থেমে থাকিনি। দীর্ঘ সতেরো বছর ধরে শত শত শাহাদাত, হত্যা, গুম, নির্যাতন, নিষ্পেষণ, অসংখ্য ভাইয়ের ক্যারিয়ার বিসর্জন এবং বহু মানুষের চোখের পানির বিনিময়ে আজ আমরা এই নেয়ামত পেয়েছি। আমাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার যে নেয়ামত এসেছে, তার যথাযথ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আমরা যদি এই নেয়ামতকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের আরও বরকত ও সুযোগ দান করবেন, ইনশাআল্লাহ।

কাঙ্ক্ষিত সমাজ বিনির্মাণের জন্য জাতি ছাত্রশিবিরের দিকে তাকিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র গঠনের মূল হাতিয়ার এবং দায়িত্বের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিবিরের কর্মী ভাইয়েরা হচ্ছেন সেই নিউক্লিয়াস, যাকে ঘিরে একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলার উপায় ও উপাদান আবর্তিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে মানুষ। কিন্তু ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষিত যে পরিবর্তন, রাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত সংস্কারসমূহ এখনো সেভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না। এ কার্যক্রমে আমরা খুবই ধীরগতি লক্ষ্য করছি। আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল ঐক্য এবং শাহাদাতের তামান্না। ঐক্যের স্পিরিটে শ্রেণি-পেশা, দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছিল। শাহাদাতের তামান্নার স্পিরিটে ফ্যাসিস্টের গণহত্যার মুখেও ছাত্র-জনতা রাজপথ থেকে পালিয়ে না গিয়ে ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা প্রদর্শন করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে বিগত সাড়ে তিন দশক ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। অথচ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা ও শিক্ষার্থীদেরকে আগামী দিনের নেতৃত্ব হিসেবে তৈরির জন্য এ নির্বাচনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এখন পর্যন্ত হাতে গোনা মাত্র দুই-একটা বিশ্ববিদ্যালয় এটা নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। অবিলম্বে সকল ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘ আড়াই দশকের গণতন্ত্রহীনতা পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান, ড. আজম ওবায়েদুল্লাহ, নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং মঞ্জুরুল ইসলাম।

অধিবেশনের সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২৫ সেশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট (কমিটি) গঠিত হয়। শেষে বিদায়ী ২২ জন কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য বক্তব্য প্রদান করেন। কেন্দ্রীয় সভাপতির সমাপনী বক্তব্য শেষে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন শেষ হয়।

এএএম/এএমএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত