Homeদেশের গণমাধ্যমেগুলি কেন, আর কোনো শব্দেই ঘুম ভাঙেনি শহীদ রিয়াজের

গুলি কেন, আর কোনো শব্দেই ঘুম ভাঙেনি শহীদ রিয়াজের

[ad_1]

‘এই শহরে পাখিদের ঘুম ভাঙে গুলির শব্দে, এই শহরে ছাত্র পড়ে থাকে মগজ ভর্তি বারুদের গন্ধে’ গত ২৯ জুলাই ‘ঋষি কাব্য’ নামে ফেসবুক পেজে সর্বশেষ স্ট্যাটাস ছিল কুমিল্লার কলেজ শিক্ষার্থী কাজী আশরাফ আহমেদ রিয়াজের। এরপর আর কোনো শব্দেই ঘুম ভাঙেনি তার। এরপর থেকে আর কোনো ছবি বা লেখা আপলোড হয়নি ‘ঋষি কাব্য’র এ পেজ থেকে।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে স্বজনরা উদ্ধার করে কাজী আশরাফ আহমেদ রিয়াজের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ। পরে ১ আগস্ট অনেকটা চুপিসারে রিয়াজের মরদেহ দাফন করা হয় এলাকার বাগড়ার পারিবারিক কবরস্থানে।

‘ঋষি কাব্য’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক প্রতিচ্ছবির নাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর নির্মমতার বহুচিত্র ধারণের পর আপলোড দেওয়া হতো ‘ঋষি কাব্য’ নামে পেজ থেকে। ‘ঋষি কাব্যে’র সেই সাহসী সৈনিক কুমিল্লার রিয়াজ।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাগরা গ্রামের ব্যবসায়ী কাজী বাবুল (৫২) ও রোকেয়া আক্তার (৩৬) দম্পতির বড় ছেলে রিয়াজ। বাবা কাজী বাবুল ফেনীতে ‘কাজী সেরওয়ানী হাউজ’ নামে একটি কাপড়ের দোকান দিয়ে সংসার চালিয়ে আসছেন।

ঢাকা কমার্স কলেজ ও পাটশালা ইউনিভার্সিটিতে ফটোগ্রাফির ওপর লেখাপড়া করছিলেন রিয়াজ। তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।


শহীদ রিয়াজের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্যাতনের বহু চিত্র ধারণ করে কাজী আশরাফ আহমেদ রিয়াজ (২৩)। পরে তার ফেসবুক পেজ ‘ঋষি কাব্য’-এ আপলোড করে তা ছড়িয়ে দিতেন।

সর্বশেষ ২৯ জুলাই রিয়াজ তার ফেসবুক পেজ ‘ঋষি কাব্য’-এ ‘এই শহরে পাখিদের ঘুম ভাঙে গুলির শব্দে, এই শহরে ছাত্র পড়ে থাকে মগজ ভর্তি বারুদের গন্ধে’ স্ট্যাটাস দেন। বিষয়টি ওই সময় আল জাজিরায় প্রতিবেদন হয়। তারপর থেকে আইনশৃঙ্খলার বিশেষ একটি বাহিনী তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। গত ২৯ জুলাই শাহবাগে আন্দোলনের সময় তাকে আওয়ামী-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করে। আহত অবস্থায় তিনি বাড়িতে চলে আসেন।

পরিবারের দাবি, ৩০ জুলাই রাতে একটি বিশেষ বাহিনী তাকে বর্বর কায়দায় নির্যাতন করে হত্যা করে ফেলে যায়। পরদিন ৩১ জুলাই নিহত রিয়াজের বাবা ঢাকায় গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

দুই ভাইয়ের মধ্যে রিয়াজ বড় ছিলেন। ছোট ভাই কাজী আব্দুল্লাহ শান্ত (২২), ফেনী পলিটেকনিকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

এলাকাবাসী জানান, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে অংশ নেওয়া রিয়াজের ক্যামেরায় ছিল সরকারদলীয় বাহিনীর নির্মমতার বহু দৃশ্য। ফলে বর্বর নির্যাতন করে হত্যা করা হয় রিয়াজকে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি তাদের।

নিহত রিয়াজের মা বলেন, আমার ছেলে একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ছিল। সে সবসময় বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের মর্মান্তিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিত, যা দেখে অন্য ছাত্ররাও আহত ছাত্রদের পাশে দাঁড়াত এবং আন্দোলনে সক্রিয় হয়েছিল।

নিহত রিয়াজের বাবা কাজী বাবুল বলেন, আমার ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছে। সে ছাত্রদের পক্ষে তার ছবির মাধ্যমে ভূমিকা রেখেছে। ২৯ জুলাই সে আমাকে ফোন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে হুমকি দিচ্ছে বলে জানায়। আমি তাকে বাসায় চলে আসতে বলি। তখন ছেলে বলে, আমি বাসা থেকে বের হলে আমাকে মেরে ফেলবে। তারপরও আমার ছেলে পোস্ট দিয়েছে। তার একটি পোস্ট নিয়ে আল জাজিরায় নিউজ হয়েছে। এতে প্রশাসন আরও ক্ষিপ্ত হয়েছে। এর ফলে আইনশৃঙ্খলার বিশেষ বাহিনী আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের বিভৎস নির্যাতনের শিকার হয়ে রিয়াজ বিদায় নিয়েছে। আমি দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

কোনো সহায়তা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান পাওয়ার কথা জানান তিনি।

এছাড়া রিয়াজ হত্যায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি বলেও তিনি জানান।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত