Homeদেশের গণমাধ্যমেচীনা কিশোরীর কাঁধে চড়ে ক্লাস করছে প্রতিবন্ধী সহপাঠী

চীনা কিশোরীর কাঁধে চড়ে ক্লাস করছে প্রতিবন্ধী সহপাঠী

[ad_1]

মধ্য চীনের হুনান প্রদেশের ছিতোং কাউন্টির কুয়ানখৌ গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কুয়াং ইউসুয়ান। প্রায় আট বছর যাবৎ হাঁটাচলায় অক্ষম প্রতিবেশী ও সহপাঠী লিউ শিহানকে পিঠে করে নিয়ে যাচ্ছেন স্কুলের এক ক্লাসরুম থেকে আরেক ক্লাসরুমে। সিঁড়ি বেয়ে করছেন ওঠানামা। চীনা সংবাদমাধ্যম সিএমজির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।

কুয়াংয়ের বয়স যখন ৬ কি ৭ বছর। গুইলেন-বারে সিন্ড্রোম রোগে আক্রান্ত লিউকে স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ ছিল না সেদিন। কুয়াং ঠিক করে সে-ই কাঁধে করে নিয়ে যাবে সহপাঠীকে।

ওইদিনের পর থেকেই লিউর স্কুলে যাওয়া ও স্কুলে চলাচলের বাহন হয়ে ওঠে কুয়াং। মাঝে মাঝে লিউর দাদি ইলেকট্রিক ট্রাইসাইকেলে করে তাদের স্কুল পর্যন্ত পৌঁছে দিলেও লিউকে শক্ত করে ধরে বসতে হয় কুয়াংয়ের কাঁধেই।  স্কুলের নিচতলা থেকে ওপরতলায় ওঠা ও ক্লাস শেষে নিচে নেমে আসতে কুয়াংই একমাত্র ভরসা।

অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী কুয়াং ইউসুয়ান বলেন, ‘আমার দাদি বলতেন, তুমি নিজেও তো হালকা, আরেকজনকে পিঠে নিলে যদি ফেলে দাও? আমি বলতাম, আমি শক্তিশালী আর আমার পেশি আছে!’

কৃষিকাজের পাশাপাশি নাতনির যত্ন নিতে বেশ হিমশিম খান লিউর দাদি। তাই প্রথম থেকেই লিউর দায়িত্ব স্বেচ্ছায় কাঁধে নিয়েছে কুয়াং। কুয়াংয়ের যেন খাটনি কম হয়, সেদিকেও নজর আছে লিউর।

লিউ সিহান বলেছেন, স্কুলে আমি খুব একটা পানি খাই না। কারণ আমাকে ঘন ঘন বাথরুমে নিয়ে যেতে কুয়াংয়ের কষ্ট হবে।

স্কুলের ভেতরে চলাচলে লিউয়ের জন্য সবসময় হাজির কুয়াং। ফাইল ছবি: সিএমজি

লিউর দাদি জানালেন, একবার যখন তিনি খামারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তখন লিউকে স্কুল থেকে আনতে ভুলে গিয়েছিলেন। যখন তিনি লিউকে আনতে স্কুলে ছুটে যান, তখন দেখেন শুকনো পাতলা একটি মেয়ে লিউকে পিঠে করে বাড়ি ফিরছেন। তারপর থেকে স্কুলের দিনগুলোতে লিউর নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠেন কুয়াং।

কুয়াং বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আগে থেকেই ভালো ছিল। একদিন হুট করেই আমি তাকে বহন করতে শুরু করি। এর পেছনে কোনও কারণ নেই। এটা আমার কাছে বেশ স্বাভাবিক।’

একদিন লিউকে কাঁধে নিয়ে বেশ কসরত করে তুষার-ঢাকা একটি মাঠ পার হচ্ছিলেন কুয়াং। সেটার ভিডিও করেন স্কুলের প্রিন্সিপাল চৌ চোংই। তিনি বলেছেন, ‘কুয়াংকে দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। এমন হৃদয়বান ও পবিত্র মনের মেয়ে সত্যিই বিরল।’

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির পর খানিকটা ঝামেলা পড়েছিলেন দুই বন্ধু। দুজনের জন্য বরাদ্দ হয় দুটো আলাদা ক্লাস। কিন্তু লিউর কথা চিন্তা করে কুয়াং জোর প্রচেষ্টা চালান ক্লাস বদল করার। শেষে স্কুল কর্তৃপক্ষ রাজি হয় দুজনকে এক ক্লাসে রাখার।

কুয়াং ও লিউর বন্ধুত্বের কথা এখন স্কুলটির মুখে মুখে। অন্য সহপাঠীদের জন্য তারা এখন অনুপ্রেরণার বিশাল উৎস। কুয়াংয়ের দেখাদেখি তারাও এখন লিউকে সাহায্য করে। তার জন্য পালা করে খাবার নিয়ে আসে সবাই।

এখন কুয়াং ও লিউর লক্ষ্য হলো একই কলেজে ভর্তি হওয়া।

লিউ সিহান বলেন, ‘যখনই আমার সাহায্যের প্রয়োজন হয়, কুয়াং সবসময় পাশে থাকে। ও যেন আমার পরিবারের সদস্য।’

তবে কুয়াংয়ের জন্যও লিউও কম করছেন না। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখা লিউ তার স্কুলের সেরা ছাত্রী। কুয়াংয়ের পড়াশোনায় সে বেশ সাহায্য করছে। সপ্তম শ্রেণীর গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার শেষে, লিউর সহযোগিতায় কুয়াং নিম্ন গ্রেড থেকে তৃতীয় গ্রেডে পৌঁছে যায়। 



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত