Homeলাইফস্টাইলমানসিক ট্রমার মোক্ষম থেরাপি কে–ড্রামা, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

মানসিক ট্রমার মোক্ষম থেরাপি কে–ড্রামা, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

[ad_1]

আপনি যদি কখনো ‘স্কুইড গেম’ বা ‘ক্র্যাশ ল্যান্ডিং অন ইউ’–এর মতো কে–ড্রামার পুরো সিজন এক বসায় দেখে ফেলেন, তাহলে আপনার জন্য সুখবর! এটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। দৃষ্টিনন্দন প্রযোজনা, দুর্দান্ত অভিনয় এবং আকর্ষণীয় তারকাদের কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার টিভি শোগুলো বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে কোরীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান থেরাপিস্ট জিনি চ্যাং বলছেন, এর পেছনে আরও গভীর কারণ রয়েছে। জেনে নেব সে কারণগুলো কী?

কেন কে–ড্রামা এত কার্যকর?

কে–ড্রামার গল্পগুলোতে পরিবার, সম্পর্ক, আশা, ট্রমা এবং আবেগের বিষয়গুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়। এগুলো মানুষকে নিজস্ব আবেগের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করতে পারে। এমনকি ট্রমা প্রক্রিয়াকরণেও সাহায্য করে।

চ্যাং বলেন, ‘আমরা সবাই পরিবার থেকে আসা চাপ, প্রত্যাশা, সংঘাত ও ট্রমার সম্মুখীন হই। কে–ড্রামায় এগুলোর যে চিত্র তুলে ধরা হয় এবং সফলভাবে সামাল দেওয়ার উপায় দেখানো হয়—তা আমাদের বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে।’

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে চ্যাং বলেন, ‘কে–ড্রামা আমাকে আমার শিকড়ের সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত করেছে।’ সেটি কীভাবে তা জানিয়ে চ্যাং বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মগ্রহণ করলেও যুক্তরাষ্ট্রে বড় হয়েছেন তিনি। শৈশবে কোরীয় পরিচয়কে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু কে–ড্রামা তাঁকে তাঁর শিকড়ের সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত করেছে।

কেবল কোরীয় দর্শকদের জন্য নয়, ‘কে–ড্রামার বার্তাগুলো সর্বজনীন’, যোগ করেন চ্যাং।

স্কুইড গেম ওয়েব সিরিজের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
স্কুইড গেম ওয়েব সিরিজের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

কেন বিশ্বজুড়ে কে–ড্রামার জনপ্রিয়তা বাড়ছে?

বিশ্বব্যাপী কে–ড্রামার দর্শকসংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে নেটফ্লিক্সে কোরীয় সিরিজ এবং সিনেমার দর্শকসংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে, যা কোরীয় কনটেন্টকে প্ল্যাটফর্মটির সবচেয়ে বেশি দেখা ‘নন–ইংলিশ শো’–এ পরিণত করেছে।

আমেরিকার স্কুলশিক্ষক জিনি ব্যারি। পরিবারের এক সদস্যের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এ সময় প্রথম কে–ড্রামা দেখেন, তাঁর এক বন্ধু তাঁকে ‘ইটস ওকে টু নট বি ওকে’ (২০২০) দেখার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

ব্যারি বলেন, ‘কীভাবে এই সংস্কৃতি ট্রমা, মানসিক অবসাদ সামলাতে শেখায় তা আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছিল।’

এই সিরিজ দেখার পর ব্যারি তাঁর অনুভূতিগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছিলেন এবং অনেক কেঁদেছিলেন, যা তাঁর শোক প্রশমনে সাহায্য করেছিল। সেই থেকেই তিনি কে–ড্রামার প্রেমে পড়েন এবং এখন পর্যন্ত ১১৪টি কে–ড্রামা দেখে ফেলেছেন!

ব্যারি এ–ও বলেন, ‘ইংরেজি ভাষার টিভি শোগুলো ভাবলেশহীন! কে–ড্রামাগুলোতে এত উত্থান–পতন থাকে যে, আমি চরিত্রগুলোর আবেগ অনুভব করি। এটি আমাকে আমার আবেগগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করেছে।’

কে–ড্রামা লাভ অ্যালার্মের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

কে–ড্রামা লাভ অ্যালার্মের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

‘আর্ট থেরাপি’ হিসেবে কে–ড্রামা

কে–ড্রামা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক হতে পারে— এমন কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে না–ও হতে পারে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ইম সু–গিউন বলেন, এটি আসলে ‘আর্ট থেরাপির’ একটি রূপ হতে পারে।

ব্যাখ্যা দিয়ে সু–গিউন বলেন, ১৯৪০–এর দশকে প্রথম আর্ট থেরাপির প্রচলন হয়, যেখানে মূলত আঁকার মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করা হতো। পরে এটি অন্যান্য শিল্পকলার মধ্যে বিস্তৃত হয়।

‘ভিজ্যুয়াল মিডিয়া, যেমন কে–ড্রামার অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে, যা মনোচিকিৎসকের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে,’ বলেন ইম সু–গিউন।

তিনি আরও বলেন, যদিও এটি চিকিৎসার আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি নয়, তবে সঠিক পরিস্থিতিতে একজন থেরাপিস্ট রোগীর অবস্থা বুঝে একটি বিশেষ কে–ড্রামা সুপারিশ করতে পারেন, যা তাঁকে নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ বিচ্ছেদ বা শোকের মুখোমুখি হন, তাহলে কে–ড্রামা তাঁকে সমাধানের পথ দেখাতে পারে।

সূত্র: এএফপি



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত