Homeঅর্থনীতিআন্তর্জাতিক বাজারে কমছে তেলের দাম, ট্রাম্পের নীতিসহ নেপথ্যে যেসব কারণ

আন্তর্জাতিক বাজারে কমছে তেলের দাম, ট্রাম্পের নীতিসহ নেপথ্যে যেসব কারণ

[ad_1]

আন্তর্জাতিক তেল বাজারে আজ মঙ্গলবারও দরপতন অব্যাহত আছে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল—তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের পরিকল্পিত উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের প্রভাব। একই সঙ্গে বেইজিংও পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে, যা বাজারে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম আরও ৯০ সেন্ট বা ১ দশমিক ২৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ দশমিক ৭২ ডলারে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট দর ৭৯ সেন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৭ দশমিক ৫৮ ডলারে নেমে আসে।

বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ফিলিপ নোভার পণ্য বিশ্লেষক ড্যারেন লিম বলেন, ‘তেলের দামের বর্তমান নিম্নমুখী প্রবণতার মূল কারণ ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ব্যবস্থা।’ তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তও বাজারকে প্রভাবিত করেছে। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বিতর্কের পর ট্রাম্প ইউক্রেনকে দেওয়া সব সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন।

জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক প্লাস গতকাল সোমবার ঘোষণা দেয় যে, আগামী এপ্রিল থেকে দৈনিক ১ লাখ ৩৮ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়ানো হবে। ২০২২ সালের পর এটাই হবে তাদের প্রথম উৎপাদন বৃদ্ধি। এই বিষয়ে লিম বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আগের উৎপাদন কাটছাঁট ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তবে এর ফলে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’

আজ মঙ্গলবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৫টা ১ মিনিট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে। কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, পাশাপাশি কানাডার জ্বালানি পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শুল্ক ব্যবস্থা অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও জ্বালানির চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা তেলের দামের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএমআই এই বিষয়ে এক নোটে লিখেছে, ‘মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনগুলোর প্রভাব মূল্যায়ন করতে হিমশিম খাচ্ছে বাজার। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ব্যবস্থা।’

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কার্যকর হওয়ার পরপরই চীন পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। দেশটি মার্কিন কৃষিপণ্য ও খাদ্যপণ্যের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে এবং ২৫টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।

তেলের দামের ওপর আরেকটি চাপ সৃষ্টি করেছে ট্রাম্পের ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত। বাজার এই ঘটনাকে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের দূরত্ব বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধ শিথিল হওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলে বাজারে আরও তেল আসতে পারে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে এমন নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছে, যা মস্কোর সঙ্গে আলোচনার সময় পর্যালোচনা করা হতে পারে।

আরেক বিনিয়োগ কোম্পানি আইজি গ্রুপের বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, ‘তেলের বাজারের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিতের খবরে মনে করা হচ্ছে, রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।’

সাইকামোর আরও বলেন, ‘এই ঘোষণাগুলো এমন সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছে। এতে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়েছে। ফলে তেলের বাজারে বিরতি নেওয়ার কোনো সুযোগই থাকছে না।’

তবে গোল্ডম্যান স্যাচের বিশ্লেষকেরা গতকাল সোমবার এক নোটে উল্লেখ করেন, জ্বালানি তেলের বাজার রাশিয়ার তেল সরবরাহ নিষেধাজ্ঞার চেয়ে ওপেক প্লাসের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার কারণে বেশি সীমিত রয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলেও রাশিয়ার রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে না।

ব্যাংকটি আরও সতর্ক করে বলেছে, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সরবরাহ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের দুর্বলতা ও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে চাহিদার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা তেলের দামের পূর্বাভাসে নিম্নমুখী ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত