Homeদেশের গণমাধ্যমেতিস্তা মহাপরিকল্পনা, গণশুনানির বদলে হলো মতবিনিময়

তিস্তা মহাপরিকল্পনা, গণশুনানির বদলে হলো মতবিনিময়

[ad_1]

তিস্তাপারের মানুষের দাবি শুনতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রংপুরের কাউনিয়ায় গণশুনানিতে এসেছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এদিন পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, তিস্তা প্রকল্প চূড়ান্ত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও চীনের ‘চায়না পাওয়ার কোম্পানি’ নদীপারের মানুষের মতামত শুনতে তিস্তাবেষ্টিত পাঁচ জেলায় গণশুনানির আয়োজন করবে।

তবে প্রকল্প নিয়ে নদীপারের মানুষের মতামত জানতে গণশুনানির কথা থাকলে সেটি না করে এর বদলে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।

সোমবার (১০ মার্চ) রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অংশীজনদের নিয়ে ‘তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

এতে তিস্তা পরিকল্পনা ঘিরে মত-দ্বিমত জানান উপস্থিতরা। ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তি, জমি বণ্টন, প্রকৃতি রক্ষাসহ প্রকল্পের নানা দিক উল্লেখ করে সমালোচনা করেন পরিবেশবাদীরা। তবে পাওয়ার চায়না কোম্পানির প্রতিনিধির দাবি, প্রকৃতি ধ্বংস করে কোনো প্রকল্প করা হবে না।

জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল সভাপতিত্বে সভায় ছিলেন পাউবো উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, পাওয়ার চায়না কোম্পানির দুজন প্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, পরিবেশবাদী সংগঠন, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন, সুশীল সমাজ ও তিস্তাপারের মানুষের প্রতিনিধিরা।

শুরুতে প্রকল্পের সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন পাওয়ার চায়না বাংলাদেশের সিনিয়র এক্সপার্ট মকবুল হোসেন। এ ছাড়া প্রকল্পের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ, প্রত্যাশিত ফলাফল, প্রকল্প বাস্তবায়নের সুফলগুলো জানান।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বলেন, উজানের পানি বণ্টনের বিষয়টি এ প্রস্তাবনায় নেই। প্রকল্প অনুযায়ী তিস্তাকে সংকীর্ণ করে ফেলা হলে ব্রহ্মপুত্রের পানি উঁচু হয়ে আসলে কী অবস্থা হবে, তা সম্ভাব্যতা যাচাই না থাকার কারণে প্রকল্পে সেভাবে আসেনি। প্রকল্প প্রস্তাবনায় জমি বণ্টন, পানি বণ্টন ও পলি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সেভাবে আসেনি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য কনক রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার এ প্রকল্পে যেসব সুবিধা দিয়েছিল এবং এখানে যে লুটপাটের অংশ নেই তা কীভাবে জানব। তিস্তা নদীর প্রকৃতির সঙ্গে এ প্রকল্প যথোপযুক্ত কি না, তা বৈজ্ঞানিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার কথা প্রকল্পে নেই। রিজার্ভার তৈরি করে পানি ধরে রাখলে আশপাশের জমির পানির লেয়ার নিচে নেমে আসবে।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন সংগঠনের সমন্বয়কারী ও কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের ওই প্রকল্পের নতুন করে আলোচনা ও জরিপ করা দরকার ছিল। আমরা চাই এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের ভাগ্যের উন্নয়ন হোক। প্রস্তাবনাটি আরও বিশ্লেষণ করে বাস্তবায়ন করা হোক।

মতবিনিময় নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুক পোস্টে নদী সুরক্ষা সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ লেখেন, তিস্তা তীরবর্তী মানুষ ছাড়া ডিসি অফিসে মতবিনিময়/গণশুনানি অসম্পূর্ণ। কদিন আগে পানিসম্পদ উপদেষ্টা তিস্তা তীরবর্তী মানুষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছেন, সেটাই চাই।

ড. তুহিন ওয়াদুদ কালবেলাকে বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন যে, তিস্তাপারের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে তারা কীভাবে নদীকে দেখেন, কী চান তার নিরিখে প্রকল্প গ্রহণ করা। প্রেজেন্টেশনে যা দেখানো হয়েছে তা তাদের কাছে উপস্থাপন করে তারা কী চান তা শুনতে হবে। তবেই তিস্তাপারের মানুষ বংশপরম্পরায় যে অভিজ্ঞতা বহন করছে তা মহাপরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে পারবে।

প্রকল্পের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও সুফল:
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অর্থনৈতিক ইন্টারন্যাল রেট অব রিটার্ন ৩৩.১০ ও বেনিফিট-কন্ট-এর অনুপাত ১.৯৩:১ এবং নেট প্রেজেন্ট ভ্যালু হবে ৬৯৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এ ছাড়া ১৭০.৮৭ বর্গ কিমি জমি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে যার আনুমানিক মূল্য ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। নদী তীরবর্তী প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পাবে।

চায়না পাওয়ার কোম্পানির কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন বলেন, প্রকল্পটি প্রকৃতিবিরোধী নয়। প্রকল্প নিয়ে মানুষের কথা শুনতে ও তাদের প্রত্যাশা জানতে আমরা এসেছি। কারণ এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য মূলত মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত