দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। এর ফাঁদে পা না দিয়ে আমরা বরং ঐক্যবদ্ধ থাকব। শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর ধানমন্ডির একটি হোটেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুব উইং জাতীয় যুবশক্তির সারা দেশের সংগঠকদের নিয়ে পরিচিতি ও সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম, জাতীয় যুবশক্তির সদস্য সচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম, জাতীয় যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল ও জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় নেতারা।
সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের রাজনীতি ও অস্তিত্ব হচ্ছে এই জুলাই গণঅভ্যুত্থান। জুলাইকে যত বেশি ধারণ করতে পারব তত বেশি এগিয়ে যেতে পারব। দুঃখজনক হলো অভ্যুত্থানের অংশীদাররা একে ক্ষমতার পালাবদল বলে মনে করছে। যার বিরোধিতা করেছে এনসিপি। আমরা মৌলিক সংস্কার চেয়েছি। কিন্তু তারা জুলাইকে রেজিম চেঞ্জ হিসেবে দেখছে। পুরোনো সংবিধানকে আঁকড়ে ধরে ক্ষমতায় যেতে চাইছে। এখানেই আমাদের আপত্তি। এখন আমাদের দরকার সংগঠিত শক্তি।
জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি বাস্তবায়নে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যত বড় শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াক, আমরা তার মোকাবিলা করব।
জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র শহীদ ও আহতদের উপহার হিসেবে দিতে যুবশক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এনসিপির আহ্বায়ক।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, সবাই যখন রাষ্ট্র সংস্কার চাচ্ছে তখন তরুণ নেতারা ক্ষমতার জন্য কাতর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় দেশপ্রেমিক যুবসমাজকে একত্রিত করাই হবে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। যারা আগামীতে দেশকে রক্ষা করবে। নতুন প্রজাতন্ত্রের জন্য লড়াই করবে। যুবকদের মধ্যে সেই দেশপ্রেম ও মূল্যবোধ তৈরি করতে যুবশক্তিকে কাজ করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যুবশক্তির কর্মপন্থা ঠিক করে দিয়ে বলেন, সব পক্ষের অংশগ্রহণ না হলে যুবশক্তি মুখ থুবড়ে পড়বে। যুবশক্তিকে রাষ্ট্রের ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করতে হবে। এতে নারী ও আলেম সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে এবং দেশি ও প্রবাসীদের উদ্যোক্তা হিসেবে আগ্রহী করতে সব ধরনের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। যুবশক্তিকে দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে কাজ করতে হবে।
জনবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক রাজনীতি ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
যোগ্যদের রাজনীতিতে তুলে আনার আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম বলেন, ৫৩ বছরের গতানুগতিক যুব রাজনীতির ইতিহাসে তেমন সাফল্যের উল্লেখ নেই। জাতীয় যুবশক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
জাতীয় যুবশক্তির সদস্য সচিব ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন, যুবশক্তি হবে এনসিপির আগামীর পাওয়ার হাউজ। তরুণ সমাজকে সংগঠিত করে নতুন রাজনৈতিক প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে কাজ শুরু করেছে যুবশক্তি।
পরিচিতি ও সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাতীয় যুবশক্তির সদস্যরা এককালীন সুনির্দিষ্ট একটি ফি ও মাসিক চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে সংগঠন পরিচালনা করবে। শেষে আগামীর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও সংগঠকদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
এম এইচ/