বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠেছে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী। বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারের পানি, এতে আতংকে রয়েছে নদীতীরে বসবাসকারী মানুষ। কোমরসমান পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ, ভেসে গেছে ঘেরের মাছ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লঘুচাপের প্রভাবে বুধবার (২৮ মে) থেকেই জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে জোয়ার আসতে শুরু করলে দুপুর দেড়টার দিকেই তলিয়ে যায় চরফ্যাশন উপজেলার পূর্ব ঢালচর, চর নিজাম, মনপুরা উপজেলার কাজিরচর, দৌলতখান উপজেলার চর বৈরাগী, তজুমুদ্দিন উপজেলার চর জহিরউদ্দিনসহ অন্যন্ত অর্ধশতাধিক নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। এতে বসতঘরে কোমরসমান পানি ঢুকেছে গেছে।
ঢালচরের বাসিন্দা মো. মোসলেউদ্দিন বলেন, জোয়ারের পানিতে ঢালচরের অন্তত অর্ধশতাধিক বসতঘরে পানি ঢুকেছে। আমাদের বসতঘরের ভেতরে কোমরসমান পানি। আমরা খুবই আতংকের মধ্যে আছি।
মনপুরা উপজেলার কলাতলী ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের চারিদিকেই এখন অথৈই পানি। আমার বসতঘরের ভেতরেও কোমরসমান পানি। পুরো কাজিরচর গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে, বাসিন্দাদের ঘেরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। বিকেল গড়িয়ে এলেও কমেনি জোয়ারের পানি।
ভোলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯ মিলিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত বাড়বে কিনা এমন পূর্বাভাস এখনও পাইনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ভোলায় ৩৫১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কোনো অংশ নাই, তারপরও আমরা বেড়িবাঁধ মনিটরিংয়ে রাখছি। তিনি আরও বলেন, ভোলার তজুমুদ্দিন উপজেলায় জোয়ারের পানি বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ও দৌলতখানে ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানিয়েছন, ভোলায় ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, ১৪টি মাটির কিল্লা, ৬৯৩টি সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক ইউনিট, ৯৮টি মেডিকেল টিম ও ২১টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম, নগদ টাকা, চাল, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য, গো খাদ্যসহ নানান প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এম এইচ/