কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভুল করে মায়ের ইনজেকশন নবজাতকের শরীরে পুশ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিশুটিকে জেলা সদরের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকদের কয়েকদিনের আন্তরিক চেষ্টায় শিশুটি আশঙ্কামুক্ত হয়ে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছে।
শিশুটির বাবা হোসেনপুরের আড়াইবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা। তিনি নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় একটি ডায়িং কারখানায় চাকরি করেন। রোববার হোসেনপুরের মডার্ণ জেনারেল হাসপাতাল নামক একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সোহেলের স্ত্রী তন্বী আক্তার সিজারের মাধ্যমে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। সিজার করেন ক্লিনিকের মালিক ডা. শাহীন সুলতানা মীরা। জন্মের পরই মাকে একটি ‘এনটি-ডি’ ইনজেকশন দেওয়ার কথা ছিল। ক্লিনিকের নার্স স্বপ্না আক্তার ভুল করে ইনজেকশনটি মায়ের পরিবর্তে শিশুর শরীরে পুশ করে দেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বজনরা চিৎকার করতে থাকলে শিশুটিকে তৎক্ষণাত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সিজারের জন্য শিশুর মাকে এ সময় হাসপাতালে পাঠানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির সঙ্গে হাসপাতালে যান তার ফুপু মমতা বেগম। মায়ের অনুপস্থিতিতে শিশুটিকে স্যালাইন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। শিশুটিকে জীবন রক্ষা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন স্বজন ও চিকিৎসকরা।
শিশুটিকে চিকিৎসা দিয়েছেন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সুজিত দাস। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার শিশুটির চিকিৎসার তদারকি করেন।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সুজিত দাস বলেন, এ ধরনের শিশুকে নিউনেটাল ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে আলাদা কোন নিউনেটাল ওয়ার্ড নেই। সাধারণ শিশু ওয়ার্ডে (পেডিএট্রিক ওয়ার্ড) ভর্তি রেখে শিশুটির দিকে সবসময় খেয়াল রাখা হয়েছে। আপাতদৃষ্টে শিশুটিকে ভাল মনে হলেও যে কোন সময় খারাপের দিকেও যেতে পারতো। শঙ্কামুক্ত হওয়ায় শিশুটিকে মঙ্গলবার বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুর বাবা সোহেল রানা জানান, তিনি ঘটনাটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান ও সিভিল সার্জন ডা. অভিজিৎ শর্ম্মাকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মডার্ণ জেনারেল হাসপাতালের মালিক শাহীন সুলতানা মীরার ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সিভিল সার্জন ডা. অভিজিৎ শর্ম্মা বলেছেন, জেলায় এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। শিশুটি সুস্থ হওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এস এইচ/