বিদেশে চিকিৎসার জন্য এখন থেকে একজন বাংলাদেশি নাগরিক বছরে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারবেন। এ জন্য অনুমতি লাগবে না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। আজ সোমবার এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতদিন ব্যক্তি ভ্রমণ কোটার আওতায় যেকোনো উদ্দেশ্যে বছরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত খরচের সুযোগ ছিল। তবে নতুন নির্দেশনায় শুধু চিকিৎসার জন্য এই সীমা বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার করা হয়েছে। অন্যান্য ভ্রমণ-সংক্রান্ত ব্যয়ের সর্বোচ্চ সীমা পূর্বের মতো ১০ হাজার ডলারই থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যয়ের যথাযথ প্রমাণপত্র দাখিল সাপেক্ষে এই অর্থ সরাসরি বিদেশি হাসপাতালকে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো যাবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করেও খরচ করা যাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আস্থার অভাব এবং উন্নত চিকিৎসা সুবিধার অভাবে প্রতিবছর বিপুল রোগী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এ খাতে প্রতিবছর প্রায় ৫০০ কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। এই প্রবণতা দেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে।
গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে দেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মানোন্নয়ন না হওয়াও একটি বড় সমস্যা। এই অবস্থায় সরকার গঠিত অর্থনীতি ও সুশাসনবিষয়ক টাস্কফোর্স স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) উন্মুক্ত করার সুপারিশ করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদেশগামীদের জন্য নগদ ডলার বহনের সীমা বাড়িয়ে ১০ হাজার ডলার করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, যা পূর্বে ছিল ৫ হাজার ডলার। ঘোষণা ছাড়া যাত্রীরা এ পরিমাণ ডলার বহন করতে পারছেন। এ ছাড়া ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বছরে একজন নাগরিকের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ১২ হাজার ডলার। মিয়ানমারের ক্ষেত্রে এই সীমা ৫ হাজার ডলার এবং সার্কভুক্ত অন্য দেশের জন্য ৭ হাজার ডলার নির্ধারিত ছিল। তবে ভ্রমণে ব্যয়ের সীমা পরবর্তীতে কমিয়ে ১০ হাজার ডলার করা হয়।
২০২২ সালে আরেকটি প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসীরা দেশে ফিরে যেকোনো ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে এবং বিদেশ থেকে আয় পাঠাতে পারবেন। এসব অ্যাকাউন্টে নগদ বৈদেশিক মুদ্রাও জমা রাখা যাবে এবং প্রবাসীরা বিদেশে ডলার নিতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতির প্রয়োজন হবে না।