Homeঅর্থনীতিতেলের বাজারে অস্থিরতায় সৌদি আরামকোর মুনাফায় ধস

তেলের বাজারে অস্থিরতায় সৌদি আরামকোর মুনাফায় ধস


তেল উৎপাদনকারী বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠান সৌদি আরামকোর ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফা ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কম হয়েছে। আরামকোর নিট আয় দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন রিয়াল (২৬ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন ডলার), যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ১০২ দশমিক ২৭ বিলিয়ন রিয়াল (২৭ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার)। বিক্রি কমে যাওয়া ও পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এই পতন হয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।

গতকাল রোববার সৌদি স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিক্রির সঙ্গেসম্পর্কিত রাজস্ব ও অন্যান্য আয়ের হ্রাস এবং পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে মুনাফা কমেছে।

আরামকোর প্রেসিডেন্ট আমিন এইচ নাসের এক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি জ্বালানি বাজারকে প্রভাবিত করেছে এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তেলের দামে প্রভাব ফেলেছে।

আমিন এইচ নাসের আরও বলেন, আরামকোর শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স কোম্পানির অদ্বিতীয় স্কেল, নির্ভরযোগ্যতা ও নমনীয়তা, স্বল্প খরচের কার্যক্রম এবং দক্ষতা ও উন্নত প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়ার প্রমাণ দেয়।

রিয়াদভিত্তিক গবেষণা সংস্থা জাদওয়া জানিয়েছে, সৌদি আরব বিশ্বের সর্ববৃহৎ অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারক দেশ এবং বর্তমানে তারা দৈনিক প্রায় ৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করছে, যা তাদের পূর্ণ উৎপাদনক্ষমতা ১২ মিলিয়ন ব্যারেলের চেয়ে কম।

তেলের দরপতন

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়ার আশঙ্কায় তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এ ছাড়া, চলতি মাসে ওপেক+ জোটভুক্ত আটটি দেশের জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তের ফলে দাম আরও চাপে পড়েছে। আগামী জুনে সৌদি আরব, রাশিয়া এবং অন্য ছয়টি দেশ মিলিতভাবে দৈনিক ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল অতিরিক্ত তেল উৎপাদন করবে। মূল পরিকল্পনায় দৈনিক মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধির কথা ছিল।

আবুধাবিভিত্তিক জ্বালানি বিশ্লেষক ইব্রাহিম আব্দুল মোহসেন বলেন, বাজার চাপে রয়েছে এবং ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকেই এর কার্যকারিতা কমতে শুরু করেছে। এর পেছনে রয়েছে দুর্বল চাহিদা ও সরবরাহের পরিস্থিতি, চীনের অপরিশোধিত তেলের চাহিদা হ্রাস, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ওপেক+ উৎপাদন নীতিতে পরিবর্তন।

সৌদি সরকার আরামকোর ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেওয়া ‘ভিশন ২০৩০’ প্রকল্পগুলো আরামকোর আয়ের ওপর নির্ভর করে। এই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মরুভূমিতে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ‘ভবিষ্যতের শহর’ নিওম (NEOM), ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন এবং রিয়াদের জন্য একটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আরামকো রেকর্ড মুনাফা করে, যার মাধ্যমে সৌদি আরব প্রায় এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাজেট উদ্বৃত্তে পৌঁছায়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেলের দামের পতনের কারণে সৌদি এই ‘অর্থনৈতিক ইঞ্জিনের’ লাভ হ্রাস পেয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে সৌদির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালে বাজেট ঘাটতি হবে জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ২০২৭ সাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত