Homeঅর্থনীতিবাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নামবে ৩.৩ শতাংশে, মূল্যস্ফীতি থাকবে উচ্চ

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নামবে ৩.৩ শতাংশে, মূল্যস্ফীতি থাকবে উচ্চ


চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে, যা গত কয়েক বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। একই সঙ্গে ১০ শতাংশের ছাড়িয়ে যাওয়া গড় মূল্যস্ফীতির হার অর্থবছর শেষে উচ্চই থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আজ বুধবার বিশ্বের শীর্ষ ঋণদাতা সংস্থাটির ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ধসের পেছনে বিনিয়োগে স্থবিরতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক বাণিজ্যে বিঘ্ন এবং উচ্চ ঋণ ও উৎপাদন খরচকে প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে বিশ্বব্যাংক। তবে আর্থিক খাত, রাজস্ব সংগ্রহ ও ব্যবসার পরিবেশের সংস্কার হলে মধ্য মেয়াদে প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মহামারির পর সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি ৪.২ শতাংশ হারে বেড়েছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৫.৮ শতাংশ। গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ রপ্তানি খাতে মন্দা এবং সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগে পতন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুলাই-অক্টোবর সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতা, কারফিউ ও ইন্টারনেট শাটডাউনের ফলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এ ছাড়া ভয়াবহ বন্যার কারণেও প্রথম প্রান্তিকে কৃষি খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই অর্থবছরে অর্থনৈতিক গতি মন্থর থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে কিছুটা উন্নতির আশা দেখিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্থিক খাত, রাজস্ব সংগ্রহ ও ব্যবসার পরিবেশে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়িত হলে মধ্য মেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে।

মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের ভোক্তারা বিপর্যস্ত রয়েছেন। এই অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) গড় মূল্যস্ফীতি ১০.৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমেছে। খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চ মূল্য ও টাকার অবমূল্যায়নের ফলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিকেই মূল্যস্ফীতির পেছনে বড় কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে বিশ্বব্যাংক।

ছবি: সংগৃহীত

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘কঠোর মুদ্রানীতির’ পথ বেছে নিয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংকের এপ্রিলের হালনাগাদ প্রতিবেদনে ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতাকে উদ্বেগজনক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থার কথা বলা হয়েছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের হার ২০.২ শতাংশে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতে কাঠামোগত সংস্কারের জন্য বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেছে বিশ্বব্যাংক।

বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ফেরাতে হলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, আর্থিক খাতের সংস্কার ও রাজস্ব আহরণের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত