পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ৮ হাজার ১০৬ টন আলু নেপালে রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে গতকাল রবিবার (৪ মে ) বিকেল পর্যন্ত এই আলু রপ্তানি করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারেন্টাইন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেন। সাধারণত স্টারিজ ও লেডিও রোজেটা জাতের আলু রপ্তানিতে প্রাধান্য পাচ্ছে।
জানা গেছে, এবার চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজারে আলুর দাম কমে গেছে। এ ছাড়া হিমাগারে কৃষকেরা সব আলু রাখতে না পারায় বাজারে আলুর সরবরাহ বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতি কেজি আলু ১০-১২ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয় কৃষক। অথচ তাঁদের প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৪-১৫ টাকা। তাই দেশের আলু রপ্তানির মাধ্যমে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৮০ লাখ টন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে আলুর উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১৩ লাখ ৮৭ হাজার টন।
এ ব্যাপারে কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোছা. মুআল্লেমা খানম বলেন, ‘এখন দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি আলুর চাষ হয়। দেশে চাহিদার চেয়ে আলুর উৎপাদন কিছুটা বেশি। এ পরিস্থিতিতে রপ্তানি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। আলুকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। আলু রপ্তানির এই উদ্যোগে স্থানীয় কৃষকেরা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। প্রতি টনের রপ্তানিমূল্য ১৫২ থেকে ১৭০ মার্কিন ডলার।’
স্থানীয় কৃষকেরা আশাবাদী যে এ ধরনের রপ্তানির মাধ্যমে তাঁদের উৎপাদিত আলুর সঠিক দাম নিশ্চিত হবে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আলু রপ্তানির ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রপ্তানির এসব আলু পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর থেকে সংগ্রহ করে নেপালের কাকরভিটায় পাঠানো হয়েছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারেন্টাইন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৮ হাজার ১০৬ টন আলু নেপালে রপ্তানি হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রপ্তানিকারকেরা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পেতে অনলাইনে আবেদন করে। রপ্তানি করা আলুগুলো বন্দর ইয়ার্ডে ঢুকলে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষানিরীক্ষার পর নেপালে পাঠানোর ছাড়পত্র দেওয়া হয়।’