Homeঅর্থনীতিবাজেট বাস্তবায়নে নেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা

বাজেট বাস্তবায়নে নেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা


দেশের বাজেট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বাজেটে বরাদ্দ থাকলেও তার সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নেই। বাস্তবায়ন হার কম, উন্নয়ন বাজেটে মূল্যায়নের ঘাটতি রয়েছে। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়া একটি সাধারণ প্রবণতায় পরিণত হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুই ভাগে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘দ্বিধারায় বিভাজনের বিষয়টি আমাদের প্রস্তাবনায় ছিল ঠিকই, তবে যেভাবে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে, সেটি গ্রহণযোগ্য নয়। আলোচনা ও অংশগ্রহণ ছাড়া, পেশাজীবীদের ভূমিকা সংকুচিত করে এবং অন্যান্য অংশীজনকে বাদ দিয়ে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। এটাকে এখন ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ড. দেবপ্রিয় বলেন, তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে, ঋণপ্রবাহ স্থবির, মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে, বিদেশি বিনিয়োগ ও পুঁজিবাজারের সূচকগুলো নিম্নমুখী। এ পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান কীভাবে বাড়বে? বেকারত্বের হার বেড়েছে ৪ শতাংশের বেশি। শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি কমে যাচ্ছে, কারণ মূল্যস্ফীতি মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি। জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আয় ১০ শতাংশের নিচে। এমনকি আগামী অর্থবছরেও এ হার নিচেই থাকবে বলে মনে হচ্ছে। পরোক্ষ করের হার বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়ছে।

বাজেটে ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, রাজস্ব ব্যয়ের দুটি খাত সবচেয়ে বেশি হচ্ছে—-প্রথমটি সুদ ব্যয় আর দ্বিতীয়টি ভর্তুকি। সরকারের অর্থনীতি পরিচালনা কোনো ঘোষিত নীতিমালার আলোকে হচ্ছে না, তা চলছে অ্যাডহক ভিত্তিতে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য মুদ্রানীতি এখনো প্রতিফলিত হয়নি। ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে এলে আমরা একটা সিগন্যাল পাব। বাংলাদেশে এ মুহূর্তে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। যুব দারিদ্র্য বাড়ছে, এটা বলা বাহুল্য।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারের বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করার বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। টাস্কফোর্স থেকে বলেছি, দ্বিবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করা দরকার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকার এলেও তারা অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবিলায় যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যে ফিসক্যাল পলিসি নিয়ে কাজ হচ্ছে, সেটাও কিন্তু গত সরকারের। পুরোনো যে কাঠামো রয়েছে, সেটাকেই ধুয়েমুছে কাজ করা হচ্ছে, সেটা আমাদের পছন্দ হয়নি।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এবং সক্ষমতা নিয়ে আমাদের আরও আত্মবিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন।’ ‘বাস্কেট কেস’ ধরনের নেতিবাচক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি স্থিতিশীল ও ন্যায্য আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক কাঠামোর অনুপস্থিতির দিকটি তুলে ধরেন, যা আজকের দিনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত