২০৫ রানের পাহাড় সমান স্কোর। এমন সংগ্রহের পরও ম্যাচ হারের ব্যথা সামলানো কঠিন। তাও যদি প্রতিপক্ষ হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো সহযোগী সদস্য দল, তাহলে সেই হার কেবলই ব্যথার নয়, হয়ে ওঠে ইতিহাসের এক গুমোট অধ্যায়।
শারজাহতে সেই রকমই এক রাত পার করল বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করে ২০৫ রান তুলে ধরা হয়েছিল আমিরাতের সামনে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন লক্ষ্য সাধারণত জয় নিশ্চিত করার মতোই। কিন্তু লড়াইটা সেখানেই থেমে থাকেনি। শেষ বলে ২ উইকেটে জয় তুলে নেয় আমিরাত। এটাই তাদের প্রথম জয় কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে, যেখানে তারা এত বড় রান তাড়া করেছে।
অথচ এই হারটিকে সহজভাবে নিতে পারলেন না অধিনায়ক লিটন দাস। ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে শিশিরকেই দায়ী করলেন তিনি, ‘আমরা ব্যাট হাতে ভালোই শুরু করেছিলাম। উইকেটও দারুণ ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে শিশির আমাদের বোলারদের কঠিন অবস্থায় ফেলেছে। তবে ছেলেরা চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি।’
এখানেই থামেননি লিটন। অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথাও বললেন, ‘এই ধরনের ছোট মাঠে খেলতে গেলে শিশির কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা আগে থেকেই মাথায় রাখতে হবে। বল করার সময় তাই একটু বেশিই হিসাব-নিকাশ করতে হবে।’
এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হলো পেসার নাহিদ রানার। যদিও তার প্রথম ম্যাচটি রাঙানো হয়নি সাফল্যে। ৪ ওভারে ২ উইকেট পেলেও খরচ করেছেন ৫০ রান। এ নিয়ে লিটনের মন্তব্য, ‘আমরা ওর কাছ থেকে আরও ভালো কিছুর আশা করেছিলাম। তবে প্রতিটি ক্রিকেটারেরই ভালো-মন্দ সময় থাকে।’
বাংলাদেশের বোলিং ব্যর্থতার সুযোগটি দারুণভাবেই কাজে লাগিয়েছেন আমিরাত অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম। মাত্র ৪২ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। উদ্বোধনী জুটিতে মোহাম্মদ জুহাইবকে সঙ্গে নিয়ে ১০৭ রান তুলে ম্যাচের ভিত গড়ে দেন দুজনেই। ওয়াসিমের নেতৃত্বে আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান দলটি শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়েই মাঠ ছেড়েছে।
জয়ের পর আবেগে আপ্লুত হয়ে ওয়াসিম বলেন, ‘আমার বলার মতো ভাষা নেই। বাংলাদেশকে হারাতে পারাটা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা জানতাম, এই কন্ডিশনে রান তাড়া করা সম্ভব, আর সেই বিশ্বাস থেকেই খেলেছি।’
এই হারের মধ্য দিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি প্রস্তুতি নিয়ে। শিশির, ছোট মাঠ কিংবা চাপ—কোনটিই নতুন নয়। তবে এমন এক ম্যাচে, যেখানে বাংলাদেশ আগে ব্যাট করে রানপাহাড় গড়ে, সেখানে এভাবে হেরে যাওয়া কেবলই হতাশার নয়, অ্যালার্ম বেল বাজানোর মতোই।