চট্টগ্রামের আকাশ আজ বৃষ্টিমুখর হলেও মাঠে ঝড় তুলেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলে নিয়েছে টাইগাররা। যার পুরো কৃতিত্ব অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট আগেই লাঞ্চ ঘোষণা করা হলেও, সেশনটিতে বাংলাদেশ একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে—এমনটা বলতেই হয়।
৪০৪ রানে পৌঁছে যাওয়া বাংলাদেশের লিড এখন ১৭৭ রান। আর সেটা এসেছে স্পিনবান্ধব উইকেটে—যেখানে আগেই দেখা গেছে টাইগার স্পিনারদের বিষধর ছোবল। এমন উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের জন্য এটা যে এক পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ, তা বলাই বাহুল্য।
সিলেটে না হলেও চট্টগ্রামেও আবার প্রমাণ দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ—দল যখন বিপদে, তিনি তখনো রক্ষা করেন মাথা ঠান্ডা রেখে। ৭৬ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চে গেছেন, দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রিত ইনিংস। আর তার সঙ্গী টেইলএন্ডার তানজিম হাসান সাকিব, ২৯ রানে অপরাজিত, যিনি শেষদিকে কার্যকরভাবে জুটি গড়েছেন।
৯ম উইকেটে এই জুটি ৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়েছে মাত্র ৭৯ বলে, যা ভেঙে দিয়েছে জিম্বাবুয়ের মনোবল।
মাঠে জিম্বাবুয়েকে আজ মনে হয়েছে ক্লান্ত, হতাশ এক দল। তারা যেন শুধুই অপেক্ষা করছিল—‘কিছু একটা ঘটুক’। কিন্তু বাংলাদেশ ঠিক বুঝে নিয়েছে যে কিছু ঘটানোর দায়িত্ব তাদেরই। বল হাতে কেউই তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি, তবে স্পিনার মাসেকেসা চারটি উইকেট নিয়ে কিছুটা সান্ত্বনা খুঁজে নিতে পারেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২২৭
বাংলাদেশ ১ম ইনিংসে: ৪০৪/৮ (মিরাজ ৭৬*, তানজিম ২৯*)
লিড: ১৭৭ রান
বৃষ্টি হয়তো সেশন শেষ করেছে একটু আগেভাগেই, কিন্তু টাইগারদের আধিপত্যে কোনো ছেদ পড়েনি। উইকেটে এখনো টার্ন আছে, বল নিচু হয়ে আসছে—যার পূর্ণ ফায়দা নিতে মুখিয়ে থাকবেন তাইজুল, মিরাজরা।
যদি আবহাওয়া সহায় থাকে, তবে এই ম্যাচ শেষ হতে খুব একটা সময় লাগবে না—এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে বাংলাদেশের আগ্রাসী শরীরীভাষা।
চট্টগ্রামের আকাশ যতই মেঘাচ্ছন্ন হোক না কেন, ম্যাচে এখন রোদের মতো জ্বলছে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ। জিম্বাবুয়ের সামনে এখন শুধুই একটাই রাস্তা—অবিশ্বাস্য কিছু করে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা। না হলে এই টেস্ট গড়াবে একতরফা পরিণতির দিকে।