জাতীয় দলে অধিনায়ক হওয়া সহজ নয়—আর বাংলাদেশ দলে তো আরও কঠিন। বিশেষ করে যখন আপনি নিজেই নিজের ফর্ম নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। এমন সময়ই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন লিটন দাস। আর তাকে নিয়ে ভরসা রাখছেন বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত লিটনের কাঁধেই থাকবে দলনেতার ভার। আর এই যাত্রা শুরু হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে।
গত এক বছরে লিটনের ব্যাটে রান নেই বললেই চলে। ১৬টি টি-টোয়েন্টিতে করেছেন মাত্র ২৪২ রান, একটি মাত্র ফিফটি। শেষ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার রান ছিল ০, ৩ ও ১৪। কিন্তু এই বাজে ব্যাটিংয়ের মাঝেও সিরিজ জিতিয়েছেন দলকে।
বিশ্বকাপে মাঠের বাইরে কিছু বিতর্কিত আচরণ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে বাদ পড়াও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনে দেয় তাকে। এসব মিলিয়ে যখন অনেকেই তার নেতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন, তখনই সালাউদ্দিন জানিয়ে দিলেন—সমালোচনার সময় নয়, এখন লিটনের পাশে দাঁড়ানোর সময়।
রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সালাউদ্দিন বলেন, ‘কেউ কেউ হয়তো মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না যে লিটন অধিনায়ক, আবার কেউ কেউ উত্তেজনায় ভেসে যাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব করা বাইরের চোখে যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে তা নয়। এটি খুব কঠিন দায়িত্ব। এজন্য সবাইকে তার পাশে থাকতে হবে।’
সালাউদ্দিন মনে করেন, লিটনের মধ্যে নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। ‘ওর মধ্যে দলকে পরিচালনা করার প্রবণতা আছে, পরিকল্পনা করার দক্ষতাও আছে। আপনি যদি তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ না দেন, তাহলে কেনই বা তাকে অধিনায়ক করবেন?’—বললেন সালাউদ্দিন।
লিটনের ‘আলাদা’ ব্যক্তিত্ব নিয়ে যারা অভিযোগ তোলেন, তাদের উদ্দেশ্যে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা লিটনকে একটু আলাদাভাবে দেখি, কারণ হয়তো ও সবার সঙ্গে সহজে কথা বলে না। কিন্তু সাকিব আল হাসানের কথাও মনে করুন—সবাই তো সবসময় খুশি থাকেনি তার আচরণে, তবুও তার পারফরম্যান্স কথা বলেছে।’
সালাউদ্দিনের মতে, নেতৃত্ব জন্মগত প্রবৃত্তি হলেও সেটি বিকাশের জন্য সময় প্রয়োজন। ‘একজন অধিনায়ককে আপনি রাতারাতি গড়ে তুলতে পারেন না। আমাদের উচিত তাকে সময় দেওয়া। আমরা যদি আবেগ দিয়ে সব বিচার করি, তাহলে উন্নতি করব কীভাবে?’