সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত দ্বি-কক্ষ সংসদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে নাগরিক উদ্যোগ ‘নাগরিক কোয়ালিশন’। তারা সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের পাশাপাশি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও তদারকির ভূমিকা চায়। আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এসব প্রস্তাব দেন তারা।
আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় দুপুর সাড়ে ১২টার পর। প্রতিনিধি দলে ছিলেন—মানবাধিকার কর্মী আইরিন খান, অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান, ভয়েস ফর রিফর্মের উদ্যোক্তা ও সংগঠক ফাহিম মাসরুর, হাসিবুর রহমান।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন—কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান।
জানা গেছে, বৈঠকে নাগরিক কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব করা হয়। যার মধ্যে সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উচ্চকক্ষের যাতে ভূমিকা থাকে সেই প্রস্তাবও করেছেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিনিধি দলের এক সদস্য বলেন, উচ্চকক্ষে যাতে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ এবং তদারকিতে ভূমিকা রাখতে পারে সেই প্রস্তাব তারা দিয়েছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক সদস্য বলেন, ‘এনসিসির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নানা মত আছে। আমরা বলেছি, আরও আলোচনার মাধ্যমে এনসিসি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে করা যেতে পারে।’ একই সঙ্গে এনসিসিতে প্রধান বিচারপতিকে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে নাগরিক কোয়ালিশন। পাশাপাশি নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।
গত ১১ মে রাজধানী রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে নাগরিক উদ্যোগ ‘নাগরিক কোয়ালিশন’ সংবিধান সংস্কারে ৭ প্রস্তাব উপস্থাপন করে। সেখানে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনের আলোচিত বিষয়গুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন ফাহিম মাসরুর।
তিনি জানান, নাগরিক কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল সংবিধান সংস্কার নিয়ে সাতটি প্রস্তাব দিয়েছিল। সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ বিষয় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা। ফাহিম মাসরুর বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবের পেছনের কারণ এবং তার স্বপক্ষে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা আমাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং তারা আমাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।’