Homeবিনোদনজিল্লু চরিত্রটি করা নিয়ে দ্বিধা ছিল আমার: শ্যাম ভট্টাচার্য

জিল্লু চরিত্রটি করা নিয়ে দ্বিধা ছিল আমার: শ্যাম ভট্টাচার্য


কলকাতার অভিনেতা শ্যাম ভট্টাচার্য। ঈদে মুক্তি পাওয়া মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘বরবাদ’ সিনেমায় ‘জিল্লু’ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি পেয়েছেন রাতারাতি তারকা খেতাব। তবে প্রথমে ‘জিল্লু’ চরিত্রটি তিনি করতে চাননি। এরপর শাকিব খানের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার ও মুম্বাইতে শুটিং হবে জেনে কাজটি করতে রাজি হন শ্যাম। যে অভিজ্ঞতা তার জন্য ছিল আনন্দনীয়। সিনেমাটির প্রচারে প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসে কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে এমনটা জানান এই অভিনেতা। লিখেছেন মহিউদ্দীন মাহি—

প্রথমবার বাংলাদেশ সফর করলেন। কেমন ভালোবাসা পেলেন?

আমি দুদিনের জন্য বাংলাদেশে এসেছিলাম। কিন্তু এই ৪৮ ঘণ্টায় আমার একবারও মনে হয়নি আমি বিদেশ সফরে এসেছি। সবাই এত পরিমাণ ভালোবাসা দিয়েছে, যা অকল্পনীয়। ভেবেছিলাম আমাকে হয়তো সেভাবে কেউ চিনবে না। কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিল। বরবাদের ‘জিল্লু’কে তারা হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসা দিয়েছে। যেখানেই গিয়েছি, সবাই আমার সঙ্গে মন খুলে কথা বলেছে, ছবি তুলেছে। এমনটা আমার ক্যারিয়ারে আগে কখনো হয়নি।

এত ভালোবাসা তো আপনি ‘বরবাদ’-এ অভিনয় করার জন্যই পেয়েছেন। এই সিনমোয় যেভাবে যুক্ত হয়েছিলেন…

কথায় আছে না, ‘যদি থাকে নসিবে আপনি আপনি আসিবে’। সেভাবেই ‘বরবাদ’ আমার কাছে চলে আসে। এর আগে আমি যতটুকু জানি—এই চরিত্রে বাংলাদেশের একজন অভিজ্ঞ অভিনেতার অভিনয় করার কথা ছিল। কারণবশত তিনি করতে না পারায় চরিত্রটি আমার কাছে আসে। তবে প্রথমে ‘জিল্লু’ চরিত্রটি করা নিয়ে আপত্তি ছিল আমার। কারণ আমি এরই মধ্যে কলকাতায় নায়ক চরিত্রে বেশকিছু কাজ করেছি। তাই নায়কের সহকারী চরিত্রে অভিনয় করতে কিছুটা দ্বিধা ছিল। তারপর যখন জানলাম সিনেমায় শাকিব স্যারের সঙ্গে আমি থাকব এবং সিনেমার শুটিং হবে মুম্বাইয়ে। তখন আর কিছুই ভাবিনি। শুধু মাথায় ছিল কাজটি আমার করতে হবে। এরপর তো সবকিছুই বদলে গেল।

এই কাজের পর জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে?

অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন পরিচিত সবাই আমাকে জিল্লু নামেই বেশি ডাকে, যা শুনে আমার আনন্দ হয়। এ ছাড়া ভারত-বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই নতুন কাজের কথা হচ্ছে, যা ভালো লাগছে।

‘জিল্লুর’ পর বাংলাদেশে আপনার অনেক ভক্ত হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রেমের প্রস্তাব পাচ্ছেন?

হ্যাঁ, অনেক ধরনের এসএমএসই পাচ্ছি। এর মধ্যে অসাধারণ কিছু বার্তা আসছে। তবে প্রেম এবং বিয়ের প্রস্তাব বেশি, যা আমার ভালো লাগছে। কারণ, তাদের ভালোবাসাতেই আজ আমি আলোচনায়। তাই আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

শাকিব খানকে বাংলাদেশে মেগাস্টার বলা হয়। কলকাতাতেও কি তাকে মেগাস্টার মানা হয়?

অবশ্যই। কারণ ঢাকাই সিনেমার সেখানে অনেক বড় ক্রেজ আছে। সেখানকার দর্শক তাকে ঢালিউডের মেগাস্টার মানে। এ ছাড়া দেব ও জিৎদার মতো তারও ভক্তকুল রয়েছে। যারা তার সিনেমা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। যেমন অনেকেই ‘বরবাদ’ কলকাতায় কবে মুক্তি পাবে, তা নিয়েও রয়েছে তাদের আগ্রহ।

পুরো কাজটি নিয়েই তো আপনার অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। তবে শাকিব খানের সঙ্গে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে জানতে চাই…

প্রথমে পুরো কাজটি নিয়ে যদি বলি তাহলে এক কথায় বলব, এটি একটি দারুণ প্রোডাকশন হয়েছে। এখানে সবাই যার যার থেকে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। এরপর শাকিব খানকে নিয়ে বলব, তিনি একজন পরিপূর্ণ আর্টিস্ট। যার মধ্যে সব ধরনের আর্ট রয়েছে। আমার সব সিনই তার সঙ্গে থাকায় এ বিষয়গুলো আমি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। সেটে তিনি শুধু নিজের চরিত্র নিয়েই ভাবতেন না, সঙ্গে আমরা কীভাবে করলে চরিত্রগুলো আরও বেশি জীবন্ত মনে হবে, তা নিয়েও দিয়েছেন পরামর্শ, যা আমার কাছে তাকে আরও ওপরে নিয়ে গেছে। কাজ ও সহকর্মীদের প্রতি তার এমন ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তাই তার সঙ্গে শুটিং অভিজ্ঞতা দারুণ।

‘বরবাদে’র পর দেশের কোনো নির্মাতা আপনাকে নিয়ে কাজের আগ্রহ দেখিয়েছে?

অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ হচ্ছে। বাংলাদেশে আশার পর কয়েকজনের সঙ্গে এমনিতে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তবে সেভাবে কোনো কাজ নিয়ে সিরিয়াসভাবে কথা হয়নি।

বাংলাদেশের কোন নির্মাতার সঙ্গে কাজের ইচ্ছা আছে আপনার এবং কাদের কাজ ভালো লাগে?

অনেকের কাজই আমার ভালো লাগে। এর মধ্যে রায়হান রাফীর কাজ বেশি পছন্দ হয়। তার ‘তুফান’ আমি দেখেছি। তার সঙ্গে কাজের ইচ্ছা আছে। এ ছাড়া হিমেল আশরাফ, শিহাব শাহীনের কাজও ভালো লাগে। আর হৃদয়ের সঙ্গে তো কাজ করলাম। তার মধ্যে আলাদা একটা স্টাইল আছে। তাই ভবিষ্যতেও তার সঙ্গে কাজ করতে চাই।

শাকিব খানের সঙ্গে তো অভিনয় করলেন। এরপর কার সঙ্গে কাজের ইচ্ছা আছে?

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ভাইয়ের কাজের ভক্ত আমি। তিনি এরই মধ্যে কলকাতায় কাজ করেছেন। বাংলাদেশেও তার অনেক দর্শকপ্রিয় কাজ আছে। তার অভিনয় আমার কাছে দুর্দান্ত লাগে। সুযোগ হলে একসঙ্গে কাজের ইচ্ছা আছে।

নায়ক হিসেবে বাংলাদেশের কোন নায়িকার সঙ্গে অভিনয়ের ইচ্ছা আছে…

বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের সঙ্গে। তিনি দারুণ অভিনেত্রী। তার ভেতরে ন্যাচারাল একটি ব্যাপার আছে। তাই তার নায়ক হতে পারলে ভালো লাগবে।

এবার সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা ছিল কী নিয়ে?

সিনেমাটি নিয়েই ব্যস্ততা ছিল। ‘বরবাদ’ নিয়ে কথা বলেছি, সিনেপ্লেক্সে আড্ডা দিয়েছি। দর্শকদের অনুভূতি জেনেছি। এভাবেই কেটেছে আমার ৪৮ ঘণ্টা। তবে এর মধ্যে আমি ঢাকার খাবারের স্বাদ নিতে ভুলিনি। কারণ আমি এখানকার খাবারের বিষয়ে অনেক প্রশংসা শুনেছি। তাই ব্যস্ততার মাঝেও ঢাকার খাবার খেতে ভুলিনি। বিরিয়ানিসহ কয়েক ধরনের খাবার খেয়েছি। যার স্বাদ অতুলনীয়।

ঢাকা থেকে তো ফিরে গেলেন, যাওয়ার সময় কী নিয়ে গেলেন?

প্রথমেই বলব দর্শকের ভালোবাসা। যেই ভালোবাসার টানেই চমৎকার এ শহরে আমার আশার সুযোগ হয়। এরপর অনেক উপহার পেয়েছি। তবে শপিং করার ইচ্ছা ছিল, সময়-স্বল্পতায় তা করা হয়নি। পরের বার এলে অবশ্যই করব। আর দুদিনে এ দেশের গণমাধ্যম থেকে সাধারণ মানুষ যে ভালোবাসা দিয়েছে, তাই হৃদয় ভরে নিয়ে এসেছি।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত