আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মের মানুষসহ দেশের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আওয়ামী লীগ বলেছে, এবারের দুর্গাপূজা এসেছে বাংলাদেশে একটি ভীতিকর অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পূজার অনুকূলে না থাকায় অনেকেই এবার পূজার অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব বলা হয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, সমস্ত ভয়-ভীতি, হুমকি, চোখ রাঙানি মোকাবিলা করে দেশের অতীত ঐতিহ্য রক্ষা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে দুর্গাপূজা পালিত হবে বলে আমরা আশা করছি।
অভিযোগ করে বলা হয়, সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় প্রতিমা ভাঙচুরের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটেছে, পূজা কমিটির কাছে লাখ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে, পূজার সময়ে মাইক বাজানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি করেছে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে; এরকম নানাবিধ ভয়-ভীতির মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হচ্ছে প্রতিটি সনাতন ধর্মের মানুষকে। এগুলো ঘটছে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনের সম্মুখেই। এগুলো দেখভাল করার মতো কেউ নেই। ফলে সনাতন ধর্মের মানুষেরা একধরনের আতঙ্কের মধ্যে অবস্থান করছে। আর এই আতঙ্কের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এ রকম পরিস্থিতিতে অনেকে জীবন বাঁচাতে দেশ ত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।
এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় মনে করে পূজা চলার সময়ে মন্দির কিংবা পূজারি আক্রান্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ১৯৪৭-র দেশ ভাগের আগে আগে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল, এবারের ঘটনার মাত্রা তার চেয়েও ভয়াবহ। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতও ক্ষমতাসীন হয়ে এদেশের সনাতন ধর্মের মানুষের উপর হিংস্র আক্রমণ করেছিল। এবারের ঘটনা সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে এসব নারকীয় ঘটনা ঘটছে। আবার তারাই মন্দির পাহারা দেওয়ার কথা বলছে। এটিও এ দেশের সনাতন ধর্মের মানুষের সঙ্গে এক ধরনের প্রহসন। বহুবিধ প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে সনাতন ধর্মের মানুষ যারা এদেশে রয়ে গেছে তারা নিজেদের উদ্যোগেই পূজা করেছে। কখনও কোনও পাহারাদারের প্রয়োজন পড়েনি।
আরও উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন যে, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আওয়ামী লীগ সর্বদা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের অবিতর্কিত মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষের প্রতি বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং কাজ করার আহ্বান রইলো।