আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গত শুক্রবার (৯ মে) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে শাহবাগ অবরোধ করেন ছাত্র-জনতা। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আজও দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগে জড়ো হওয়ার তথ্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে।
‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তোলা প্রত্যেকটা দল একাত্তরবিরোধী শক্তি’—বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে এমন একটি বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। মির্জা ফখরুলের ছবি ও ওই বক্তব্যসংবলিত একটি ফটোকার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ফটোকার্ডে একটি বেসরকারি টেলিভিশন ও একটি জাতীয় দৈনিকের লোগোও যুক্ত করা হয়েছে।
‘People’s Power-A L’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত শুক্রবার দুপুর ২টা ১৯ মিনিটে পোস্ট করা যমুনা টেলিভিশনের লোগোসংবলিত ফটোকার্ডটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ গত ৯ মে উল্লেখ করা। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই পোস্টে ৭২২টি রিঅ্যাকশন পড়েছে, কমেন্ট পড়েছে ৯১টি ও শেয়ার হয়েছে ২৭৬ বার।
‘শেখ হাসিনার সৈনিক’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত শুক্রবার সকাল ৮টা ১৮ মিনিটে পোস্ট করা দৈনিক জনকণ্ঠের লোগোসংবলিত ফটোকার্ডটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। এই ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ গত ৮ মে উল্লেখ করা। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই পোস্টে ৭২৬টি রিঅ্যাকশন পড়েছে, কমেন্ট পড়েছে ৮২টি ও শেয়ার হয়েছে ১২৯ বার।
Nasir Uddin Pawloan ও যুবলীগ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় একই তথ্যে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ফটোকার্ড যাচাই: ০১
এটি যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড কি না, তা যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ। অনুসন্ধানে যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও ইউটিউবে গত ৯ মে বা অন্য কোনো তারিখে এমন কোনো ফটোকার্ড কিংবা এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে যমুনা টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে সম্প্রতি প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলোর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডের কিছু অমিল দেখা যায়। যমুনা টেলিভিশনের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ফটোকার্ডের ফন্টের সঙ্গে ভাইরাল ফটোকার্ডটির ফন্টের মিল নেই।

যমুনা টেলিভিশনের নিউ মিডিয়া বিভাগের প্রধান রুবেল মাহমুদকে ফটোকার্ডটি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, যমুনা টেলিভিশন এমন ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। এটি ভুয়া।
ফটোকার্ড যাচাই: ০২
ছড়ানো ফটোকার্ডটি দৈনিক জনকণ্ঠের কি না, তা যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ। অনুসন্ধানে দৈনিক জনকণ্ঠের ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও ইউটিউবে গত ৯ মে বা অন্য কোনো তারিখে এমন কোনো ফটোকার্ড কিংবা এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে সম্প্রতি প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলোর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডের কিছু অমিল দেখা যায়। দৈনিক জনকণ্ঠের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ফটোকার্ডের ফন্টের সঙ্গে ভাইরাল ফটোকার্ডটির ফন্টের মিল নেই।
দৈনিক জনকণ্ঠের সহসম্পাদক শিহাব উদ্দীনকে ফটোকার্ডটি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, দৈনিক জনকণ্ঠ এই ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।
এ ছাড়া ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তোলা প্রত্যেকটা দল একাত্তরবিরোধী শক্তি’– এমন মন্তব্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন কি না, তা জানার চেষ্টা করে আজকের পত্রিকা ফ্যাক্টচেক বিভাগ। তবে এ বিষয়ে গুগলে সার্চ করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তোলা প্রত্যেকটা দল একাত্তরবিরোধী শক্তি’— বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন মন্তব্য করেননি। যমুনা টেলিভিশন ও দৈনিক জনকণ্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড ছড়ানো হচ্ছে।